মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিনা চিকিৎসায় পঙ্গুত্বের জীবন কাটছে রাজবাড়ীর হাসান মাহমুদের। সাত মাস ধরে ক্ষতস্থানে পচন নিয়ে বিনা চিকিৎসায় পড়ে আছেন। ফিরতে পারছেন না দেশেও। মালিকপক্ষ দেশে পাঠানোর কথা বললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

জানা যায়, সংসারে হাল ধরতে গত বছর মালয়েশিয়ায় যান রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থানার দুদুখান পাড়া গ্রামের মো. তাহাদুল ইসলামের ছেলে হাসান মাহমুদ (২৬)। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি তার।

হাসান মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে জানান, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রাস্তায় পরিচ্ছন্নতার কাজ করার সময় দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। পরে সহকর্মীরা উদ্ধার করে ক্লাং শহরের টঙ্কু আম্পুয়ান রহিমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসরা এক্সরে করে দেখেন ডান পায়ের হাড় ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গা হাড় জোড়া লাগাতে ভেতরে ঢুকানো হয় রড। কিন্তু ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হলে হাড় জোড়া লাগার আগেই রড খুলে ফেলা হয়।

২৫ দিন হাসপাতালে থাকার পর মালিকপক্ষ তাকে হোস্টেলে নিয়ে যায়। হাসান মাহমুদ বলেন, হাসপাতাল থেকে আসার পর দেশে পাঠিয়ে দেবে দেবে করে সাত মাস কেটে গেছে। এই ৭ মাসে কোম্পানি আমাকে চিকিৎসা দেয়নি, বেতনও দেয়নি। আশপাশের বাংলাদেশিদের সাহায্যে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। কারো সাহায্য ছাড়া টয়লেটেও যেতে পারেন না বলে জানান তিনি।

হাসান মাহমুদ গত বছরের মে মাসে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে কলিং ভিসায় ঢাকার সাউথ পয়েন্ট ওভারসিজের মাধ্যমে লালুয়ান থুলুস এসডিএন বিএইডি নামের একটি কোম্পানির চাকরি নিয়ে মালয়েশিয়ায় যান। স্বপ্ন দেখেছিলেন সংসারে সুদিন ফিরবে, হবে বৃদ্ধ বাবার চিকিৎসা, সেইসঙ্গে একমাত্র ছোট বোনের পড়াশোনাও হবে। হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় তার জীবনে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার, এলোমেলো হয়ে গেছে সবকিছু। রঙিন স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো হাসানের এখন ক্ষুধা মিটে অন্যের দেওয়া সাহায্যে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) এ এস এম জাহিদুর রহমান ভুক্তভোগীকে লিখিত আবেদন করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, কর্মীদের বেতন না দেওয়া, আহত/মৃত্যুজনিত মামলাগুলো দূতাবাস গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।

এসএসএইচ