ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে দূতাবাসের উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকাল ৯টায় দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রদূত জাতীয় সংগীতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এতে স্থানীয় রাজনৈতিক,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, সাংবাদিক ও প্রবাসী বাংলাদেশি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশের আয়োজনে ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন। পরে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদত্ত বিশেষ বাণীসমূহ পাঠ করা হয়।

এ সময় রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম তার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণতার সঙ্গে এবং নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন।

এ সময় রাষ্ট্রদূত সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের দিকে আলোকপাত করেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ‌স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। রাষ্ট্রদূত ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি ও পদক্ষেপের বিষয় উল্লেখ করে আশা প্রকাশ করেন যে, অচিরেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা এর সুফল পেতে শুরু করবেন এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ইতালিতে উজ্জ্বল হবে।

একই দিন সন্ধ্যায়, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস, রোমের একটি পাঁচ তারকা হোটেলের হলে কূটনৈতিক অভ্যর্থনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ইতালি সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিনিস্টার প্লেনিপটেনশিয়ারি মিজ আলেসান্দ্রা স্কিয়াভো প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ইতালিয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তাগণ, রোমে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থাসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ ও কূটনীতিকগণ, বিদেশি সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, গবেষক, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ ইতালিতে বিভিন্ন জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থায় কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। পরে তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশের এ মাহেন্দ্রক্ষণে আসা অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বাংলাদেশ ও ইতালির বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি দুই দেশের বহুমাত্রিক সহযোগিতা আরও জোরদারের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

এরপর রাষ্ট্রদূত বিশিষ্ট অতিথিদের নিয়ে জাতীয় দিবসের কেক কাটেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের স্থানীয় খাবারের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

এমএ