পর্তুগালে ক্রিসমাস : ঐতিহ্য, বিশ্বাস আর পারিবারিক উৎসব
ইউরোপের দক্ষিণ-পশ্চিমের দেশ পর্তুগালে ক্রিসমাস অত্যন্ত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও সামাজিক আনন্দের সঙ্গে উদযাপিত হয়। খ্রিষ্টান অধ্যুষিত এই দেশে বড়দিন শুধু একটি উৎসব নয় বরং পরিবার, বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের এক বিশেষ মিলনমেলা। এই উৎসবকে ঘিরে পর্তুগিজদের মধ্যে কাজ করে এক অন্যরকম আবেগ ও প্রাণের স্পন্দন।
পর্তুগালে ক্রিসমাস উদযাপন শুরু হয় ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, যাকে বলা হয় ‘কনসাদা’। এই রাতে পরিবারের সবাই একত্রে বসে বিশেষ নৈশভোজ উপভোগ করেন। ঐতিহ্যগতভাবে এই খাবারের প্রধান পদ হলো লবণাক্ত কড মাছ বা ‘বাকালাউ’, যা সেদ্ধ আলু, সবজি ও অলিভ অয়েলের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া কিছু অঞ্চলে অক্টোপাস বা অন্যান্য সামুদ্রিক খাবারও জনপ্রিয়।
বিজ্ঞাপন
মোরগের প্রার্থনা নৈশভোজের পর অনেক পরিবার মধ্যরাতে গির্জায় যান ‘মিসা দো গালো’ নামের বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নিতে, যার অর্থ ‘মোরগের প্রার্থনা’। এই প্রার্থনা যিশু খ্রিষ্টের জন্মকে স্মরণ করে অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি ক্রিসমাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষঙ্গ।
এদিন সকালে পরিবারের সদস্যরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান এবং উপহার বিনিময় করেন। শিশুদের জন্য এটি সবচেয়ে আনন্দের সময়, কারণ তারা বিশ্বাস করে ‘পাই নাতাল’ (পর্তুগিজ সান্তা ক্লজ) তাদের জন্য উপহার নিয়ে আসেন।
বিজ্ঞাপন
প্রেসেপিও ও আলোকসজ্জার সাজ পর্তুগালে ক্রিসমাসের সময় ঘর সাজানো হয় রঙিন আলো, ক্রিসমাস ট্রি ও ‘প্রেসেপিও’ বা যিশুর জন্মদৃশ্যের মডেল দিয়ে। শহর ও গ্রামজুড়ে আলোকসজ্জা, ক্রিসমাস মার্কেট এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যা উৎসবের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
পর্তুগালে ক্রিসমাস উদযাপন ধর্মীয় বিশ্বাস, পারিবারিক বন্ধন ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের এক অনন্য সমন্বয়। এই উৎসব মানুষের মধ্যে ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও আনন্দের বার্তা ছড়িয়ে দেয়।
বিআরইউ