বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কনিষ্ঠ পুত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন গভীর শ্রদ্ধার স‌ঙ্গে উদযাপন করেছে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকালে অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

পরে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত শেখ রাসেলের শৈশব ও কিশোরকাল নিয়ে আলোচনা করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, শেখ রাসেল ছিল নম্র, ভদ্র এবং আচরণে অত্যন্ত মার্জিত। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া শেখ রাসেলও পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন।

রাষ্ট্রদূত উপস্থিত সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বঙ্গবন্ধু যেদিন জাপানের মাটিতে পা রাখেন সেদিন ছিল ১৮ অক্টোবর ১৯৭৩ অর্থাৎ শেখ রাসেলের জন্মদিন। সেদিন বাবার সঙ্গে রাসেলও জাপানে এসেছিলেন। পুরো জাপান সফরে শেখ রাসেলকে অনেক চঞ্চল, হাসি-খুশি দেখা গেছে। কখনো সে পুকুর পারে মাছ দেখে আনন্দে মেতেছে, আবার কখনও জাপানি ঐতিহ্যবাহী জামা – ‘ইউকাত্তা’ পরে জাপানি নাচ আর বাদ্য উপভোগ করেছে।

রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন বলেন, মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানব ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞে, কাপুরুষ - ঘাতকের বুলেটে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে অন্য সবার সঙ্গে না ফেরার দেশে চলে যায় শহীদ শেখ রাসেল। সেদিন বিশ্বের মায়া, মমতা হারিয়ে গিয়েছিল, মানবতা হয়েছিল নির্বাসিত, স্তব্ধ। ক্ষমতা দখল কিংবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য পৃথিবীর ইতিহাসে বহু দেশে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা নারী ও কোমলমতি শিশু রাসেলসহ পুরো পরিবারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। 

রাষ্ট্রদূত আরও ব‌লেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে হয়তো বাবা ও বড় বোনের মতো দেশের নেতৃত্ব দিতেন। বাংলাদেশকে নিয়ে যেতেন অনন্য উচ্চতায়। রাষ্ট্রদূত তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

এরপর আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। আলোচকরা শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং অনুষ্ঠান আয়োজন করায় দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান। তারা দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে শহীদ শেখ রাসেলের জীবনের উপর নির্মিত একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শেষ পর্যায়ে জন্মদিন উপলক্ষে উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে কেক কাটেন রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ।

এনআই/এনএফ