‘নূর দুবাই চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন’র মাধ্যমে আমিরাত ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের ট্রাকোমা চিকিৎসা সম্পন্ন করেছে

বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবায় আমিরাতের সম্প্রসারিত ট্রাকোমা প্রতিরোধ কর্মসূচি ও সেবাদান একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। দেশের সীমা ছাড়িয়ে কর্মসূচিটির সাফল্যের পাল্লা ভারী হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। যার জন্য মিলছে নানান স্বীকৃতি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ কর্মসূচি আমিরাতকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছে। সব থেকে বড় কথা, এ কর্মসূচির জন্যই অন্ধত্বের হার কমানোর পাশাপাশি এটিকে পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব হচ্ছে।

ইথিওপিয়ায় আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মাদ বিন রশেদ আল মাকতুমের চ্যারিটেবল প্রতিষ্ঠান ‘নূর দুবাই চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন’র মাধ্যমে আমিরাত ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের ট্রাকোমা চিকিৎসা সম্পন্ন করেছে। ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে ৮৭ মিলিয়ন ডোজ। পাশাপাশি অন্ধদের জন্য সাড়ে তিন লাখ অপারেশন এবং ৫০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে তাদের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

মুহাম্মাদ বিন রশেদ আল মাকতুম, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈশ্বিক মানবিক অগ্রযাত্রা কোনো কিছুই থামাতে পারবেন না। নূর দুবাই চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনটি গত ৮ বছরে ইথিওপিয়ায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষকে ট্রাকোমা থেকে চিকিৎসা দিয়েছে।

নুর দুবাই ফাউন্ডেশন ইথিওপিয়ার আমহারা অঞ্চলে এ রোগ নির্মূল করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাকোমা মোকাবিলায় আমিরাত ৪ বছরের জন্য একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। আগামী ৪ বছরের প্রচেষ্টায় ট্র্যাকোমা রোগ নির্মূলে করার চেষ্টা করবেন বলে মুহাম্মাদ বিন রশেদ আল মাকতুম আশা প্রকাশ করেছেন।

আমিরাতের প্রভাবশালী মিডিয়া আল বায়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসার জন্য ১৪৩ মিলিয়ন মানুষের জন্য বিতরণ করা ৪৩ মিলিয়ন ওষুধের ডোজ আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেখানে পৌঁছে যাবে। ট্রাকোমা সারাবিশ্বে অন্ধত্বের অন্যতম কারণ। এ রোগের জটিলতার কারণে ১.৯ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ চাক্ষুষ প্রতিবন্ধকতায় ভুগছে। এদের মধ্যে পুরোপুরি অন্ধত্বের শিকার হয়েছে ১.২ মিলিয়ন মানুষ। বিশ্বের প্রায় ১৩৬.৯ মিলিয়ন মানুষ ট্রাকোমায় আক্রান্ত অঞ্চলে বাস করে।

এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় সরকার ও সমাজ মারাত্মকভাবে অর্থনৈতিক মন্দার শিকার হয়। আক্রান্ত পরিবারগুলো অর্থনৈতিক দারিদ্র্যে ভোগে। রোগটি এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের মধ্যে সংক্রামিত হয়। শিশুরা সংক্রমণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। শিশুদের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনে মহিলারাও আক্রান্ত হন। তারা পুরুষদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ এ রোগে আক্রান্ত হোন।

আমিরাতের একান্ত প্রচেষ্টায় ইথিওপিয়ার শহর, গ্রাম, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সবাই এখন জানে, ট্রাকোমা রোগ প্রতিরোধের জন্য আমিরাতের নুর দুবাই চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন কাজ করছে। মায়েরা এখন নিজ উদ্যোগেই তাদের সন্তানকে নুর দুবাই চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের সেবাদান কেন্দ্রে নিয়ে আসেন।

এমএইচএস