আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান ‘মহামারি ও ভাষা’
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সামনে রেখে ‘মহামারি ও ভাষা’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং অমর একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন, সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল অব লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স, টেলরস ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি এ প্যানেল আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে বিশেষ ক্ষেত্রে ভাষার স্পষ্ট ব্যাখ্যার ওপর গুরত্বারোপ করেন। তিনি বলেন যে, বিশ্বের কোনো কোনো নেতা যেখানে জাতীয়তাবাদী/সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিয়ে মহামারীকে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির কাজে ব্যবহার করেছেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেলের মতো নেতারা এ সময়ে মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, সংহতি এবং অন্তর্ভুক্তির বার্তা দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
মালদ্বীপের শিল্প, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিষয়ক মন্ত্রী ইউমনা মামুন তার ভিডিও বার্তায় করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের কথাও তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণের চেতনাকে বহন করে।
টেলরস ইউনিভার্সিটির নির্বাহী ডিন প্রফেসর ড. লীথিয়ানান্থন আরিরাগাভান বলেন যে, ভাষা-সৃষ্ট যোগ সূত্র সংস্কৃতির দেওয়াল পেরিয়ে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন যে, কোভিড-১৯ মহামারী ভাষা ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ তার স্বাগত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, চলমান মহামারী কাটিয়ে উঠতে হলে ভাইরাসের ভাষা, রাষ্ট্রের ভাষা এবং জনগণের ভাষার মধ্যে মেলবন্ধন তৈরির কোনো বিকল্প নেই।
এছাড়া এ অনুষ্ঠানে এশিয়া প্যাসিফিক রেজিওনাল ব্যুরো ফর এডুকেশনের পরিচালক শিগেরা অয়াগি, মালয়েশিয়ায় ইউনিসেফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. রাশেদ মোস্তফা সারওয়ার বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেলরস ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. ওয়ানজাওয়াই। এছাড়া প্যানেল আলোচনায় থাইল্যান্ডের চুললিংকন ইউনিভার্সিটির ড. নুংথাই, সিঙ্গাপুরের শামিনিফ্লিন্ট, ফ্রান্সের প্রীতাসমরাসান, হংকং-এর জোসেফগঞ্জালেস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আমেনা মোহসিন অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস্ স্বাগত বক্তব্য দেন। ভারতের হাইকমিশনার, মালদ্বীপ ও নেপালের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সও এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া ছাড়াও ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, রাশিয়া, জাপান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং শ্রীলংকার হাইকমিশন/দূতাবাস সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গান এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।
এনএফ