ভারতের নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। 

দিবসটি পালন উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, প্রভাতফেরি, ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, দূতাবাস প্রাঙ্গণে নির্মিত একুশের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণসহ দূতাবাসের ‘বঙ্গবন্ধু হল’ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

দিবসের শুরুতে হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এ সময়ে ভারতে সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা অসীম কুমার উকিল, অ্যাডভোকেট আবিদা আনজুম মিতা, মনোরঞ্জন গোপাল, দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহমেদ এবং দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণকারীদের কণ্ঠে ভাষা সংগ্রামের অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ সমস্বরে উচ্চারিত হয়।

পরে দূতাবাসের ‘বঙ্গবন্ধু হল’ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়ে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের পাঠানো বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান বক্তব্য দেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভাষা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী সব শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলা পেয়েছি তারা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন। বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় তিনি জাতিসংঘের অবদানকে তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কারণেই আজ বিশ্ব দরবারে বাংলাভাষা ও বাঙালি এক অনন্য উচ্চতায়। শেখ হাসিনা আজ উন্নয়ন ও নেতৃত্বের প্রশ্নে বিশ্বের রোল মডেল।

হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ৫২র ভাষা আন্দোলন একটি সংগ্রামী ও বীরত্বগাঁথা ইতিহাস, আমরা বাংলাদেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে বর্তমান প্রজন্মের কাছে এটি তুলে ধরতে চাই। তিনি ভাষা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক অবদানের কথাও তুলে ধরেন।

বিকেলের অনুষ্ঠানে অংশ নেন নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের বিশিষ্টজন, লেখক, বুদ্ধিজীবী ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা। পরে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে এক দোয়া মাহফিল ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এ সময় মহান ভাষা আন্দোলনের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্রও প্রদর্শিত হয়।

জেডএস