আজান শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো, ডাকা, আহ্বান করা। আজান দ্বারা উদ্দেশ হলো, বিশেষ কিছু শব্দের মাধ্যমে নামাজের সময় সম্পর্কে জানানো। আজানের মাধ্যমেই মুসলমানরা বুঝতে পারেন যে নামাজের সময় হয়েছে।

নামাজের জন্য আজান দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা, যা ওয়াজিবের কাছাকাছি। এছাড়াও তা ইসলামের অন্যতম নিদর্শন বহন করে। আজান শোনা ও আজানের জবাব দেওয়া স্বতন্ত্র্য ইবাদতও বটে।

মুমিন মাত্রই নবীজির হাদিস ও তাঁর নির্দেশনা মেনে সওয়াব ও পরকালের পাথেয় অর্জনের চেষ্টা থেকে আজানের উত্তর ‍দিতে চাইবেন। তবে কেউ যদি আজানের সময় আজানের উত্তর না দিয়ে অন্য কোনও দোয়া পড়েন, তাহলে এটা ঠিক হবে কিনা?

এ বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, আজনের সময় অন্য কোনও দোয়া পাঠ ও জিকির-আজকারের পরিবর্তে আজানের উত্তর দেওয়া উচিত। কারণ, হাদিসে আজানের সময় আজানের উত্তর দেওয়া ছাড়া অন্য কোনও আমলের প্রমাণ পাওয়া যায় না।

হাদিসে আজানের জবাব দেওয়ার বিষয়ে অনেক সওয়াবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসুল! মুয়াজ্জিনদের মর্যাদা যে আমাদের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমিও তা-ই বল, মুয়াজ্জিন যা বলে। তারপর আজান শেষ হলে (আল্লাহর কাছে) চাও। (তখন) যা চাইবে তা-ই দেয়া হবে।’ (আবু দাউদ, মেশকাত)

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনবে, তখন জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১১) আর চুপ থেকে আজান শোনা সুন্নত। 

তাই আজানের সময় অন্য কোনও দোয়া পাঠ ও জিকির-আজকারের পরিবর্তে আজানের উত্তর দেওয়া উত্তম। কারণ সওয়াব লাভের জন্যই দোয়া ও জিকির আজকার করা হয়, তাই সাময়িক সময়ের জন্য এসব আমল বন্ধ করে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম।

কারণ, আজানের পরে আরও এই আমলগুলো করা যাবে তবে অল্প সময়ের জন্য তা বন্ধ করে আজানের জবাব দিলে এতে অন্য আমলের সওয়াব পরেও পাবে। কিন্তু আজানের সময় তাৎক্ষণিক উত্তর না দিলে পরে আর এর সওয়াব পাওয়া যাবে না। -

( সূত্র : আসসিআয়াহ ২/৫১; রদ্দুল মুহতার ১/৩৯৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২৫৯)

এনটি