দুধকলা দিয়ে আমরা অধিকাংশ মানুষ হিংসা নামক সাপ পুষছি। অথচ নবীজী সা. বলেছেন, তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা হিংসা নেক আমলকে ধ্বংস করে, যেভাবে আগুন শুকনো কাঠকে ধ্বংস করে (আবু দাউদ)।

আপনার সকল নেককর্ম অক্ষত রাখতে চাইলে হিংসা ত্যাগ করুন। নয়তো কেয়ামতের ময়দানে গিয়ে দেখবেন আপনার এত সাধনার আমলের খাতা শূন্য। হিংসা নামক আগুন আপনার সমুদয় আমল জ্বালিয়ে দিয়েছে।

নফল ইবাদতের পরিমাণ বাড়ানোর থেকেও শত শত, হাজার গুণ বেশি জরুরি হল আপনার মাধ্যমে কোনও মানুষের হক নষ্ট হচ্ছে কিনা তার খেয়াল রাখা। সমাজে অনেকেই আছেন মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে এসেই আরেকজনকে নিয়ে সমালোচনা শুরু করে দেন। জেনে, না জেনে, বুঝে না বুঝে অন্যের নামে কত ধরনের সমালোচনা শুরু করে দেন। তাহলে নামাজ রোজা, ইবাদত , তাসবিহ তাহলিলের কী দরকার আছে?

জাহান্নামে যাওয়ার জন্য বেশি কিছুর প্রয়োজন হবে না। এই বদ আমলের প্রায়শ্চিত দিতেই সব শেষ হয়ে যাবে। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যকে দেখে ‍হিংসা করতে নিষেধ করেছেন। কারো সম্পদ, উন্নতি দেখে হিংসা করা মানে তাকে হিংসা করা নয় বরং তাকে যেই আল্লাহ তায়ালা এই প্রাচুর্য দিয়েছেন আপনি পরোক্ষভাবে আল্লাহ তায়ালাকেই হিংসা করে বসলেন। অন্যের প্রতি হিংসার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে আল্লাহ তাকে যা দান করেছেন আপনি তা মানতে পারছেন না, তাই তার প্রতি হিংসা করছেন। এজন্য একজন প্রকৃত মুমিন কারো উন্নতিতে কষ্ট পায় না, বরং খুশি হয়।

হিংসুক কখনো ভালো মুসলমান হতে পারে না। এজন্য কারো প্রতি অন্তরে হিংসা বিদ্বেষ রাখা যাবে না। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর আগে সবার অন্তরে যত খারাপ গুণ সব পরিস্কার করে তারপর প্রবেশ করাবেন। 

দুধকলা দিয়ে যেভাবে মানুষ সাপ পুষে, ঠিক তেমনি এমন কিছু হারাম, পাপ পুষে রাখে মানুষ নিজের ভেতর যা সব আমল শেষ করে দেয়, তার একটি হলো এই হিংসা-বিদ্বেষ। অনেকে নামাজ পড়ে, দাড়ি আছে, টুপি আছে, বড় বড় জুব্বা পড়ে, ওয়াজ-মাহফিল করে, কিন্তু তারপরও নিজের ভেতর এই হিংসা-বিদ্বেষে ভরা।  আত্মপর্যালোচনা করে কেউ যদি নিজের পরিস্কার অন্তর নিয়ে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে পারে, তাহলে আখেরাতের পথ মসৃণ হয়ে যাবে।

এনটি