প্রতিটি মানুষের ভালো-মন্দের পরীক্ষা করা হবে। সেজন্য আল্লাহ তাআলা মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। যারা উত্তম কাজ করবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক জীবনযাপন করবে— তাদের চিরস্থায়ী পুরস্কার দেওয়া হবে। আর যারা মন্দভাবে এবং আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর আনুগত্যহীন জীবনযাপন করবে— তাদের জন্য থাকবে চিরস্থায়ী শাস্তি।

বস্তুত মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার স্থান এই দুনিয়া। ভালো কাজের বিনিময়ে মুমিনদের পুরস্কারস্বরূপ জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। আর মন্দকাজের কারণে কাফেরদের চিরস্থায়ী ঠিকানা হবে জাহান্নাম।

চিরসুখের ও অনিঃশেষ শান্তির আধার জান্নাতের প্রবেশাধিকার সর্বপ্রথম যিনি লাভ করবেন, তিনি হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (সা.)। তিনি কেবল নিজে প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। বরং সঙ্গে নিজের উম্মতকেও নেবেন। 

পৃথিবীতে রাসুল (সা.)-এর উম্মত সর্বশেষ। তবে সবার আগে জান্নাতে যাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করবে। এটি উম্মতে মুহাম্মদির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা। আর উম্মতগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে তারই উম্মত। এ হল মহান আল্লাহকর্তৃক প্রদত্ত বিশেষ সম্মান।

এ বিষয়ে রাসুল (সা.) বলেন— 

আমি সর্বপ্রথম জান্নাতের দরজায় করাঘাত করব। ...আমিই জান্নাতে প্রথম সুপারিশকারী হব।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি জান্নাতের নিকট এসে তার দরজা খুলতে বলব। দারোয়ান ফিরিশ্‌তা বলবেন, কে আপনি? আমি বলব, ‘মুহাম্মাদ। দারোয়ান বলবেন, আমি আদিষ্ট হয়েছি, যেন আপনার পূর্বে অন্য কারো জন্য দরজা না খুলি।

(মুসলিম, হাদিস : ১৯৭)

রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘আমরা (দুনিয়ায়) সর্বশেষে এসেছি, সর্বপ্রথম কিয়ামতে (আখেরাতে) উপস্থিত হব এবং আমরাই সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করব।’ (বুখারি, হাদিস : ২৩৮; মুসলিম, হাদিস : ৮৫৫)

উম্মতে মুহাম্মদির মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন আবু বকর (রা.)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল বলেন, ‘জিবরাইল এসে আমার হাত ধরে জান্নাতের দরজা দেখাল, যে দরজা দিয়ে আমার উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন আবু বকর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমিও আপনার সঙ্গে থাকব যেন জান্নাতের দরজা দেখতে পারি। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘হে আবু বকর, শুনে রাখো, আমার উম্মাতের মধ্যে সর্বপ্রথম তুমি জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৫২)