শরিফুল ইসলাম

সমান তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে নিউজল্যান্ডে গেছে বাংলাদেশ দল। সেখানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন চলছিল টাইগাদের। কোয়ারেন্টাইনের নবম দিনে বাঁধলো বিপত্তি। ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো গোটা নিউজিল্যান্ড। কম্পনের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে, ভয়ে বাকি রাত ঘুমাতে পারেননি পেসার শরিফুল ইসলাম।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ মার্চ) রাত ২টা ২৭ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ৪ মার্চ ৯টা ২৭ মিনিটে) এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সুনামি সতর্কতায় উপকূলীয় এলাকা থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নিতেও নির্দেশ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল নিউজিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডে। সেখান থেকে টিম হোটেল বেশ দূরে। প্রায় সাড়ে ৭০০ কিলোমিটারের পথ। তবুও ক্রাইস্টচার্চে অবস্থানরত বাংলাদেশ দল যে হোটেলে উঠেছে, ভূমিকম্পের সময় কেঁপে ওঠে গোটা বিল্ডিং। নিউজিল্যান্ড থেকে ঢাকা পোস্টকে ভূমিকম্পের সময়ের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন দলের নবীন সদস্য শরিফুল।

ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে শরিফুল বলেন, ‘এখানে তখন স্থানীয় সময় রাত আড়াইটা মতো। আমি প্রচণ্ড রকমের ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এত জোরে নড়ে উঠছে এটা অকল্পনীয়! আপনি এটা বুঝতে পারবেন না। কম্পনের জন্য আমি ঘুম থেকে ওঠে গেছি। রুমের লাইট অন করে দেখি পানির বোতল নড়ছে। তখন তো আমার ভেতর প্রচণ্ড ভয় কাজ করছিল।’

শরিফুল আরও বলেন, ‘শুরুতে বুঝতে পারিনি এটা ভূমিকম্প কি না। প্রাথমিক অবস্থায় মনে হচ্ছিল বোধহয় অশরীরী কিছু একটা হবে। তবে আমি এসবে ভয় পাই না। এ কারণে শক্ত ছিলাম। পরে বুঝতে পারলাম এটা ভূমিকম্পই। আমি আপনাকে বুঝাতে পারব না কিভাবে কেঁপে উঠছে গোটা বিল্ডিংটা। আড়াইটা থেকে এখন প্রায় সাড়ে ছয়টার মতো বাজে, আমি ঘুমাতে পারিনি আর।’

নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন। আলাদা আলাদা কক্ষে আছে সবাই। এজন্য সতীর্থদের কারো সঙ্গে এখনো কথা হয়নি বলে জানালেন শরিফুল। 

তিনি বলেন, ‘এখানে যেহেতু আমরা সবাই আলাদা আলাদা থাকছি, এখনো সতীর্থদের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। হয়তো সকালে অনুশীলনে গেলে এ বিষয়ে কথা হবে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

এর আগে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ড সফর করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে সেই সফর শেষ না করেই দেশে ফিরতে হয় টাইগারদের। বর্তমানে যে শহরে আছে দল, সেই ক্রাইস্টচার্চেই সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। ওই টেস্টের আগে ক্রাইস্টচার্চের একটি মসজিদে হামলা হলে টেস্ট সিরিজের মাঝপথে দেশে ফিরে আসে তামিম ইকবালরা।

সেই সফরে অবশ্য ছিলেন না শরিফুল। সিনিয়রদের কাছে ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন। এদিন যেন সেই দিনটি নেমে আসে শরিফুলের কাছে, ‘শুরুতেই বিষয়টি আমার মাথায় এসেছিল যে আবার কি তেমন কিছু হচ্ছে! এখানে আমরা আসার কয়েকদিনের ভেতরে একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল রাত ১০টার দিকে, আতশবাজি ফুটেছিল অনেক শব্দ করে। তখনও আমাদের ভেতরে একটা ভয় কাজ করছিল যে আমরা এখানে আসলেই কি এমন কিছু হয়।’

টিআইএস/এমএইচ/ওএফ