‘হাসতে হাসতে খুন!’ বহুল প্রচলিত কথাটি নিয়ে তো আস্ত দু’খানা বই-ই লিখেছেন পূর্ণেন্দু পত্রী আর আনিসুল হক। বাংলাদেশ দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সে বই পড়ার কথা নয়! তবে আড়াই বছর এদেশে কাটিয়ে এখানকার সংস্কৃতি তো কিছুটা হলেও শিখেছেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান। তা না হলে হাসতে হাসতে সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্য করে কেনই বা বলবেন, ‘কিল দ্য মিডিয়া!’

শুনতে আশ্চর্য লাগলেও আজ (রোববার) চট্টগ্রামে অনুশীলন এ কথায় বলেছেন রাসেল। সাইড আর্ম থ্রোয়ার নাসিরকে উদ্দেশ্য করে ডমিঙ্গো বলেন, মিডিয়াকে মারো! 

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ দলের ঐচ্ছিক অনুশীলন চলছিল। অনুশীলনে নেটে পাশাপাশি ব্যাট করছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর নাঈম শেখ। নেটের ঠিক পিছনে স্টেডিয়ামের মূল বেষ্টনী। লোহার তৈরি বেষ্টনী খুব বেশি উঁচুও নয়। 

নাঈম শেখ যে নেটে ব্যাট করছিলেন, তার ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ঢাকা পোস্টের ক্রীড়া সংবাদিকসহ আরো ৩-৪ জন সংবাদকর্মী। নাঈমকে ব্যাটিং অনুশীলন করাচ্ছিলেন ডমিঙ্গো, সঙ্গে ছিলেন সাইড আর্ম থ্রোয়ার নাসির। নাসিরের করা থ্রো মাঝ উইকেটে পড়ে লাফিয়ে ওঠে। বলটি খেলতে পারেননি নাঈম। পরবর্তীতে সে বল নেট ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে আসে।

নেট ফাঁকি দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাওয়া বলটি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক সংবাদকর্মীর পাশে আঘাত করে। তখন নাসিরকে উদ্দেশ্য করে ডমিঙ্গোকে বলতে শোনা যায়, ‘কিল দ্য মিডিয়া।’ সেখানে উপস্থিত এক সংবাদকর্মী ডমিঙ্গোকে বলেন, ‘ডোল্ট কিল আস!’

পরবর্তীতে ডমিঙ্গোর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘সংবাদকর্মীদের মারতে চাও কেন? কী শত্রুতা তোমার আমাদের সঙ্গে?’ ডমিঙ্গো অবশ্য এর জবাব দেননি। অট্টহাসিতে যেন বোঝাতে চাইলেন, ‘মজা করছিলাম বন্ধু!’

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে রাসেল ডমিঙ্গোর সম্পর্কটা যে খুব একটা সুখকর নয়, এ খবর নতুন কিছু নয় দেশের ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে। ওয়ানডে সুপার লিগে তার কোচিংয়েই পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠেছে বাংলাদেশ দল, নিউজিল্যান্ড টেস্ট জয়ের ঐতিহাসিক মুহূর্তও এসেছে তার আমলেই। তবুও নানান কারণে বিতর্কিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হেড কোচ।

ডমিঙ্গোর সে সব খবর নিয়মিত প্রচার হয় সংবাদমাধ্যমে। যদিও গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের পর অনুশীলন শেষে ডমিঙ্গো বলেছিলেন, ‘গণমাধ্যম ও মানুষ যা বলে, আমি তাতে মেজাজ হারাতে পারি। কিন্তু এটা করা জরুরী নয়। আপনাদের কাজ এটা, আপনারা আমাকে বা খেলোয়াড়দের নিয়ে যা খুশি লিখতে পারেন। আমি সেটা খেলোয়াড়দের থেকে দূরে রাখি। আপনাদের যা খুশি আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমি মেজাজ হারাব না। কিন্তু সত্যি বলতে, আপনারা যা লেখেন তা বেশিরভাগ সময় আমি বুঝতেই পারি না।’

এমন ঘটনার পর প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, ডমিঙ্গো কি আসলেই এসবের কিছু বোঝেন না, মেজাজ হারান না ডমিঙ্গো?

টিআইএস/এটি/এনইউ