সাকিব-তামিমরা না খেললে বিকল্প ভাবনা আছে বিসিবির
টেস্ট স্ট্যাটাসের ২১ বছর পার হলেও এই ফরম্যাটে একেবারেই সুবিধা করতে পারছে না বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। জয় আসছে কালেভদ্রে। দেশের বাইরে টেস্ট খেলতে নেমে আরও ভয়াবহ অবস্থা বাংলাদেশ দলের। ৫৬ ম্যাচ খেলে মোটে ৪ জয়।
প্রায় ১ বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে ঘরের মাঠে তুলনামূলক দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে টাইগাররা। এবার মিশন শ্রীলঙ্কা। সেখানে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি ম্যাচ খেলবে টাইগাররা। দলের এমন অবস্থায়ও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলার জন্য ছুটি নিয়েছেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে থাকবেন না তিনি। সাকিবের এমন সিদ্ধান্তের পর নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। জানিয়েছেন, সাকিব-তামিমরা না খেললে বিকল্প ভাবনা আছে বোর্ডের।
বিজ্ঞাপন
বুধবার মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমরা মে-জুন মাসের মধ্যেই যদি জেনে যাই কে কোন সংস্করণে খেলতে ইচ্ছুক, তাহলে আমরা সে অনুযায়ী দল তৈরি করতে পারব। সেটার জন্য যে খেলোয়াড় তৈরি আছে, এ ব্যাপারে আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি। হতে পারে তারা প্রথমে গিয়েই তামিম-সাকিবের মতো পারফর্ম করবে না। কিন্তু প্রত্যেকের সে সামর্থ্য আছে। এই যে ইমার্জিং কাপ হলো, কতগুলো ছেলেকে আপনারা দেখলেন, তারা দারুণ এবং ইয়াং। ওদের মানসিকতা এভাবে তৈরি করা। মানে এখন থেকে চেষ্টা করলেন দুই বছর পরে তৈরি করা সম্ভব। দরকার ওয়ার্ল্ড ক্লাস ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি। সেটা তো আমরা অবশ্যই দেব। আমি খুব একটা চিন্তিত না।’
বিসিবি সভাপতি আগেই জানিয়েছেন, এবার ভিন্ন পথে হাঁটবে ক্রিকেট বোর্ড। বছরের শুরুতে ক্রিকেটারদের থেকে লিখিত নেওয়া হবে, কে কোন ফরম্যাটে খেলতে চান, আর কে খেলতে চান না। সে হিসেবে বছর জুড়ে পরিকল্পনা সাজাবে বিসিবি। সেখানে যদি সাকিব-তামিমদের মতো ক্রিকেটারও কোন ফরম্যাটে খেলতে অস্বীকৃতি জানান, তাতেও অসুবিধা দেখছে না বোর্ড। এতে বরং সুবিধা দেখছে বিসিবি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সীমিত ওভারে দুই ফরম্যাটে ভালো করলেও টেস্টে বেহাল দশা লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। দলের এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের জন্য নিয়মিত টেস্ট খেলতে না পারাকে দুষছেন পাপন। তবে তিনি আশাবাদী এক বছরের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ টেস্ট দল। বুধবার মিরপুরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিন আয়োজন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে বিসিবি। সেখানে গণমাধ্যমের মুখোমুখি এসব কথা বলেন নাজমুল হাসান পাপন।
বিসিবি প্রধান বলেন, ‘সমস্যাটা হলো একটা হচ্ছে আমরা আগে টেস্ট খেলতাম না। এখন আমরা টেস্টে খুবই খারাপ অবস্থায় আছি। দ্বিতীয়টা হচ্ছে আমার কাছে এই গত এক-দেড় বছরের মনে হয়েছে একটা দলের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে কোন ম্যাচ বা সিরিজ ঘিরে তখন যে পরিকল্পনা ছিল, এখন সেগুলোর সঙ্গে কোনও মিল নেই। এখন তারা তাদের পরিকল্পনার পরিবর্তন করেছে। ভালো-খারাপ সেদিকে আমি যাচ্ছি না। তো ওই পরিকল্পনা কাজে দিচ্ছে না। অন্তত এখন দিচ্ছে না। দীর্ঘসময় পর কি হবে আমি জানিনা। এর সাথে আমার মনে হয়েছে অনেকে এ ফরম্যাটে খেলতে চায় না।’
পাপন আরও যোগ করেন, ‘এই করোনা পরিস্থিতিটা না থাকলে আমাদের পরিকল্পনা ছিল এই বছরের মধ্যেই যতো পারি টেস্ট খেলা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই করোনার কারণেই আমাদের একটা বছর চলে গেল। কোনও খেলাধুলা নেই, টেস্ট তো দূরে থাক। সে দিক দিয়ে আমার মনে হয় আমরা এক বছর পিছিয়ে গেছি। কিন্তু এক বছর পরে দেখবেন বাংলাদেশ টেস্টও ভালো কিছু করবে ইনশাল্লাহ।’
টিআইএস/এটি/এমএইচ