সংক্ষিপ্ত স্কোর-
নিউজিল্যান্ড: ৩১৮/৬, ৫০ ওভার (কনওয়ে ১২৬, মিচেল ১০০*, গাপটিল ২৬; রুবেল ৩/৭০, সৌম্য ১/৩৭)
বাংলাদেশ: ১৫৪/১০, ৪২.৪ ওভার (রিয়াদ ৭৬, লিটন ২১, মুশফিক ২১; নিশাম ৫/২৭, হেনরি ৪/২৭)

ফল: নিউজিল্যান্ড ১৬৪ রানে জয়ী।

দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ। বেশ আয়োজন করে উদযাপিত হচ্ছে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি। দেশে না থাকলেও বিশেষ এ উপলক্ষ রাঙানোর সুযোগ ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সামনে। তবে আগের দুই ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও ব্যর্থ অধিনায়ক তামিম ইকবালের দল। জয় দিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী রাঙানো হলো না তাদের। নিউজিল্যান্ডের কাছে ১৬৪ রানে হেরে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পেল টাইগাররা।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে এখনো জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। তিন ফরম্যাটেই জয় বঞ্চিত থেকে এবার ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নেমেছিল সফরকারীরা। অধিনায়ক তামিমের পাশাপাশি দলের একাধিক সদস্য জানিয়েছিলেন, অধরা জয়ের খোঁজ মিলবে এবার। সে লক্ষ্যে মাঠে নেমে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অসহায় আত্মসমর্পণ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয়ের খুব কাছে গিয়েও ধরা যায়নি। আজ শুক্রবার হারতে হলো শেষ ম্যাচেও। এতে অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশ দলের।

এদিন ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভ মাঠে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের সামনে ৩১৯ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দেয় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। পাহাড়সম টার্গেট টপকাতে নেমে শুরুটা সুখকর হয়নি সফরকারীদের। অধিয়ানক তামিমকে (১) দিয়ে শুরু, এরপর একে একে সৌম্য সরকার (১) ও লিটন দাসের (২১) উইকেট তুলে নেন কিউই পেসার ম্যাট হেনরি।

২৬ রানে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ মিঠুন ও মুশফিকুর রহিম। রক্ষণাত্মক কৌশলে হাঁটেন তারা। ৬৬ বলে ২২ রানের জুটি গড়েন দুজন। তাদের পার্টনারশিপ বড় হতে দেননি জেমিসন। মিঠুনকে তুলে নেন তিনি। ৩৯ বলে ৬ রান করে মিঠুন আউট হলে জোড়া আঘাত হানেন নিশাম। ইনিংসের ২৬তম ওভারে বল করতে এসে মুশফিক ও মিরাজের উইকেট তুলে নেন তিনি। মুশফিক ২১ রান করলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি মিরাজ। 

সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে হতাশ করেছেন শেখ মেহেদী হাসানও। নিশামের তৃতীয় শিকারে পরিণত হয়েছেন তিন রান করে। মুশফিক, মিরাজ, মেহেদীর আউট ক্রিজে দাঁড়িয়ে দেখেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। শেষদিকে সে কাজটি করেন তাসকিন। তবে ফায়দা হয়নি তাতে। অনেক আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে নিজের অর্ধশতক তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। শেষপর্যন্ত ৭৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থাকলেও দলের বড় হার এড়াতে পারেননি। মাত্র ১৫৪ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। এতে ১৬৪ রানের জয় তুলে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের তিক্ত স্বাদ দেয় নিউজিল্যান্ড। কিউইদের হয়ে ২৭ রানে ৫ উইকেট তুলে নেন নিশাম।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে স্কোর বোর্ডে রান পাহাড় জমা করে নিউজিল্যান্ড। ডেভন কনওয়ে ও ড্যারিল মিচেলের অভিষেক সেঞ্চুরিতে ৩১৮ রানের সংগ্রহ পায় তারা। এদিন উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলস। ব্যক্তিগত ১৮ রানে নিকোলস আউট হলে ৪৪ রানের পার্টনারশিপ ভাঙে তাদের। এরপর ২৬ রানে থাকা গাপটিলকে তুলে নেন এ ম্যাচে সুযোগ পাওয়া রুবেল হোসেন। সুবিধা করতে পারেননি চোট কাটিয়ে ফেরা রস টেলর, ৭ রান করে রুবেলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। 

১৮ রানে থাকা কিউই দলপতিকে আউট করে চতুর্থ উইকেটে ৬৩ রানের পার্টনারশিপ ভাঙেন সৌম্য সরকার। এরপরের গল্পটা ডেভন কনওয়ে ও ড্যারিল মিচেলের। টাইগার বোলারদের শাসন করতে থাকেন দুজন। পঞ্চম উইকেটে গড়েন ১৫৯ রানের জুটি। এরই এক ফাঁকে ওয়ানডেতে নিজের অভিষেক সেঞ্চুরি তুলে নেন কনওয়ে, পরে মুস্তাফিজের বলে আউট হন ১২৬ রান করে। শেষদিকে মিচেলের শতকের উপর ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৩ উইকেট নেন রুবেল হোসেন।

আগের দুই ম্যাচের সঙ্গে তৃতীয় ম্যাচটি ১৬৪ রানে জিতে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের তিক্ত স্বাদ দেয় নিউজিল্যান্ড। টাইগারদের বিপক্ষে এর চেয়ে বড় জয় আছে তাদের কেবল একটি। ২০০২ সালে কলম্বোয় ২৪৫ রানের লক্ষ্য দিয়ে জিতেছিল ১৬৭ রানে।

টিআইএস/এটি