নির্বাচক থেকে অধিনায়ক ও হেড কোচ, সবাই সাফাই গেয়েছেন লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুনদের হয়ে। প্রতিভার জোরে টিকে থাকা এই ৩ ব্যাটসমানের ব্যাটে ধারাবাহিকতা নেই দীর্ঘদিন ধরে। শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে আলোচনায় এই তিন ক্রিকেটার। তবে তাদের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে টিম ম্যানেজম্যান্ট। লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে সৌম্য সাইড বেঞ্চে। লিটন-মিঠুন একাদশে জায়গা পেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি।

লিটন-মিঠুনদের ব্যর্থতায় আবারও দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন সিনিয়ররা। যদিও দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে ইনিংস বড় করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। তবে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফিফটিতে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৫৭ রান তোলে স্বাগতিকরা। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন অফ স্পিনার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ম্যাচ জিততে হলে সফরকারীদের প্রয়োজন ২৫৮ রান।

করোনা আতঙ্কে ম্যাচের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও পূর্ব নিধারিত সময়েই টস করতে নামেন দুই দলের অধিনায়ক। যেখানে টস ভাগ কথা বলে তামিম ইকবালের হয়ে। টস জয়ের পর ব্যাটিং নিতে ভুল করেননি টাইগার দলপতি। লিটনকে নিয়ে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী তামিম। তবে শুরুতেই হতাশ করেন লিটন। দুশমন্থ চামিরার ১৪৬ কিঃমিঃ গতির আউটসুংগার পড়তে পারেননি তিনি। আলতো খোঁচায় ধরা পড়েন স্লিপে থাকা ধনঞ্জয়ার হাতে।

শূন্য রানে লিটন ফিরলে উইকেটে আসেন সাকিব। কাঙ্ক্ষিত তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশন ফিরে পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেছেন ২৮ রানের ইনিংস। আজ গুনাথিলাকাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ফেরেন ১৫ রান করে।

৪২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে খানিক ব্যাকফুটে চলে যায় স্বাগতিকরা। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন তামিম ও মুশফিক। তৃতীয় উইকেটে ৫৬ রান যোগ করেন দুজন। এর এক ফাঁকে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫১তম ফিফটি তুলে নেন তামিম। পরে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১৪ হাজার রানের মাইলফল স্পর্শ করেন আউট হন। তামিম ৫২ রানে আউট হওয়ার পরের বলেই সাজঘরের পথ ধরেন মিঠুনও।

ইনিংসের ২৩তম ওভারে দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা তবে শেষপর্যন্ত সফল হয়নি তিনি।  ৯৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবার বড় সংগ্রহের শঙ্কা তৈরি হয় বাংলাদেশ দলে। সেই শঙ্কা অবশ্য উরে যায় মুশফিক আর মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। পঞ্চম উইকেটে ১০৯ রান যোগ করেন দুজন। 

এক ফাঁকে নিজের ৪০তম ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। ছুটছিলেন তিন অঙ্কের দিকে। তবে ইনিংসের ৪৪তম ওভারে চায়ানাম্যান সান্দাকানকে রিভার্স সুইপ করতেব গিয়ে বিপত্তি বাধান তিনি। উদানার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৮৪ রান করে। আউট হওয়ার আগে ৮৭ বলের ইনিংসটি সাজান ৪টি চার ও ১টি ছয়ের মারে।

শেষদিকে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৪তম অর্ধশতকের স্বাদ পাওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৫৪ রানের সঙ্গে অপরাজিত আফিফ হোসেনের ২২ বলে ২৭ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ৯ বলে ১৩ রানের ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ওভার শেষে স্কোর বোর্ডে ২৫৭ রানের পুঁজি পায় স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। জয়ের জন্য লঙ্কানদের প্রয়োজন ২৫৮ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

বাংলাদেশ: ২৫৭/৬, ৫০ ওভার (তামিম ৫২, সাকিব ১৫, মুশফিক ৫৩, মাহমুদউল্লাহ ৫৪, আফিফ ২৭*, সাইফউদ্দিন ১৩*; ধনঞ্জয়া ৩/৪৫, গুনাথিলাকা ১/৫, সান্দাকান ১/৫৫)

টিআইএস