শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে মাহমুদউল্লাহদের হারিয়ে মুশফিকদের জয়
চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করতে চেষ্টার কমতি রাখেনি আয়োজন সংস্থা সিসিডিএম। প্রথম পর্বের পর সুপার লিগ টেলিভিশন পর্দায় সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছে। করোনাভাইরাসের কারণে গ্যালারিতে দর্শক প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও ওভার শেষে বা চার-ছক্কা আর উইকেট উদযাপনের বিরতিতে ডিজে মিউজিক উপভোগ করছেন মাঠের ক্রিকেটাররা। এতো আয়জনের ভিড়ে মাঠের লড়াইও বেশ জমে উঠেছে।
আজ (সোমবার) মিরপুরে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ও আবাহনী লিমিটেড। এ ম্যাচে বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন আবাহনীর জাতীয় দলের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন তিনি। এতে গাজী গ্রুপ থামে ১৩০ রানে। ১৩১ রানের লক্ষ্য টপকাতে নেমেও বিপাকে পড়ে আবাহনী। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৮ রান প্রয়োজন পড়লে ১ বল ও ১ উইকেট হারে রেখে জয় পায় আকাশী-নীলরা।
বিজ্ঞাপন
টস হেরে ব্যাট করতে নামে গাজী গ্রুপ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ৩ রানে থাকা ওপেনার শেখ মেহেদী হাসানকে ফেরান সাইফউদ্দিন। এরপর অবশ্য হাত খুলে খেলতে থাকেন সৌম্য সরকার ও জাকির হোসেন। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে গাজী গ্রুপের সংগ্রহ ১ উইকেটে হারিয়ে ৪৩ রান।
সৌম্যকে ফিরিয়ে দুজনের ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২৪ বলে সমান ২টি করে চার-ছক্কায় সৌম্যর ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান। যা গাজী গ্রুপের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারায় গাজী গ্রুপ। জাকির হোসেন থামেন ২৫ বলে ২৭ রান করে পেসার সাকিবের বলে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৭ বলে ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি। শেষদিকে মুমিনুল হকের ১২ বলে ২৫ রানের কল্যাণে শেষ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ১৩০ রানের পুঁজি পায় গাজী।
বিজ্ঞাপন
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে আবাহনীর হয়ে ৪ ওভারে ১৮ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। যদিও এই ফরম্যাটে এর আগে ৩ বার ৪ উইকেট পেয়েছেন তিনি। তবে এবার রান দিয়েছেন অন্যবারের তুলনায় কম। সঙ্গে ৩ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান রানা।
১৩১ রানের লক্ষ্য টপকাতে নেমে শুরুতেই মুনিম শাহরিয়ার (০) ও লিটন দাসের (২২) উইকেট হারিয়ে খানিক বিপাকে পড়ে আবাহনী। এরপর নাজমুল হাসান শান্তর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। কিন্তু ইনিংসের ১১তম ওভারে জোড়া আঘাতে মুশফিক ও মোসাদ্দেকের উইকেট তুলে নিয়ে আকাশী-নীলদের আবার চাপে ফেলে দেন গাজী গ্রুপের পেসার মুকিদুল ইসুলাম মুগ্ধ।
পরে শেষ ৩ ওভারে আবাহনীর জয়ের জন্য দরকার পড়ে ২৭ রান। ক্রিজে ছিলেন দুই সেট ব্যাটসম্যান শান্ত-আফিফ। এমন মুহূর্তে বোলিংয়ে এলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় বলেই লং অন দিয়ে ৬ মেরে যেন হুঙ্কার দিলেন শান্ত। কিন্তু পারলেন না আফিফ, ১৮ বলে ১৪ রানে বিদায়। রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ফিরলেন বোল্ড হয়ে। পরের বলে মাঠে এসেই কাভারে ক্যাচ তুলে দিলেন সাইফউদ্দিন।
শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ১৯তম ওভারে শান্তর উইকেট হারিয়ে আবাহনীর স্কোরবোর্ডে উঠে ৯ রান। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ’র তৃতীয় শিকার হয়ে শান্ত ফেরেন ৪৯ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় ৫৮ রান করে। শেষ ওভারে হাতে ২ উইকেট নিয়ে প্রয়োজন ৯ রান। প্রথম দুই বলে ৫ রান আসলেও তৃতীয় বলে তাড়াহুড়োয় দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন মেহেদী হাসান রানা। তবে দলকে বিপদে পড়তে দেননি আরাফাত সানি (১*) ও তানজিম হাসান সাকিব (৪*)। ১ উইকেট ও ১ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে আবাহনী। সুপার লিগে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়।
টিআইএস