‘লক্ষ্মীপুরের মাশরাফি হবেন হাসান’
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ পাওয়ার এক বছর পর এবার ওয়ানডে দলে নতুন মুখ লক্ষ্মীপুরের পেসার হাসান মাহমুদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৮ সদস্যের ওয়ানডে দলে নতুন তিন ক্রিকেটারের মধ্যে হাসান অন্যতম।
একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলার জন্য দলে নাম আসায় খুশি হাসানের বাবা মো. ফারুক, মা মাহমুদা খাতুন রানী, ভাই আবুল হাসনাত হৃদয় ও লক্ষীপুরের কোচ মনির হোসেন। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টের কাছে তারা নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দিয়ে নড়াইল, কাটার মাস্টার মোস্তাফিজকে দিয়ে যেমন সাতক্ষীরা আলোকিত হয়েছে। হাসানকে দিয়েও লক্ষ্মীপুরের নাম দেশসহ বিশ্বের ক্রিকেট অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়বে বলে জানান তারা। এজন্য লক্ষ্মীপুরসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন কোচ ও পরিবারের সদস্যরা।
হাসান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুক ও গৃহিনী মাহমুদা খাতুন রানীর ছোট ছেলে। তারা দুই ভাই ও তিন বোন। ভবিষ্যতে সফলতা কামনা করে তার বাবা-মা লক্ষ্মীপুরসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
হাসানের বাবা মো. ফারুক বলেন, ‘হাসান আগে জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেছে। এবার ওয়ানডে দলে সুযোগ পাওয়ায় তাকে নিয়ে খুব গর্ব হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরসহ সারাদেশের মানুষের দোয়াই হাসান ইনশাআল্লাহ ভালে খেলে দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।’
মা মাহমুদা খাতুন রানী বলেন, ‘হাসানের ৫০ ওভারের ম্যাচে সুযোগ পাওয়ায় লক্ষ্মীপুরের কোচ মনিরসহ কয়েকজন আমাকে ফোন দিয়েছে। আমার ছেলে যেন ভালো খেলে দেশ এবং দশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি। হাসান সবসময় খেলাধুলায় মেতে থাকতো। কিন্তু আমাদের সঙ্গেই থাকতো। এখন খেলার কারণে বেশিরভাগ সময়ই ঢাকায় থাকে। তাকে খুব মিস করি। তবে প্রতিদিনই তার সঙ্গে কথা হয়। আল্লাহ তাকে ভালো রাখুক, সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’
হাসানের বড় ভাই আবুল হাসনাত হৃদয় বলেন, ‘পেস বোলারদের ইনজুরিতে বেশি পড়তে হয়। হাসানও ডান হাতে চোট পেয়েছে। অপারেশনের পর আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয়ে খেলতে পেরেছে। হাসান যেন ইনজুরিতে না পড়ে এবং ভালো খেলে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনতে পারে, সে জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
লক্ষ্মীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট কোচ মনির হোসেন বলেন, ‘হাসান লক্ষ্মীপুরের গর্ব। বিগত ১০ বছর আগেও জাতীয় দলের লক্ষ্মীপুরের ক্রিকেটারের কথা বিবেচনা করা দুঃস্বপ্ন ছিলো। হাসান লক্ষ্মীপুরের মানুষের স্বপ্ন পূরণ করেছে। সাবেক সফল অধিনায়ক মাশরাফি ও কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের মত হাসানকে দিয়ে সবাই লক্ষ্মীপুরকে চিনবে।’
শুক্রবার (১৬ জানুয়ারি) বিসিবির প্রস্তুতিমূলক ওয়ানডে ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ একাদশের পক্ষে হাসান মাহমুদ বোলিং নৈপুন্যে নিজের চার উইকেট পেয়েছেন। জাতীয় দল ও বিপিএলসহ বিভিন্ন টুর্নামেন্টে তিনি নিখুঁত লাইন-লেন্হের পাশাপাশি গতি দিয়ে বেশ আলোচিত ছিলেন। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪২ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করার রেকর্ড আছে তার। সবশেষ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ টুর্নামেন্টে খুলনার হয়ে নিয়মিতই ১৩৫ থেকে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেছেন।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হাসান বাংলাদেশের হয়ে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছিলেন। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের কুইন্সটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়েছেন। তখন তার বোলিংয়ের প্রশংসা করে ‘ভবিষ্যৎ তারকা’ লিখে টুইট করেছিল আইসিসি।
২০১২ সালের শেষ দিকে জেলা ক্রিকেট একাডেমিতে কোচ মনিরের সঙ্গে হাসানের পরিচয় হয় হাসানের। মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে তার ক্রিকেট খেলা শুরু হয়। প্রথম থেকেই তার রান আপ, গেদার, ব্যাকফুট, ল্যান্ডিং, রিলিজ, বলিং স্পট, অ্যান্ড ফলো থ্রো ভালো ছিল। বিকেএসপিতে সুযোগ পাওয়ার পর থেকে তাঁর বোলিংয়ে গতি বেড়ে যায়।
এমএইচ