বেশ কিছুদিন ধরেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন তিনি। করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপরই রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। কিন্তু জীবনের যুদ্ধে ফেরা হলো না। মারা গেলেন প্রবীণ ক্রীড়া সংগঠক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাইসউদ্দিন আহমেদ (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বুধবার ঢাকা পোস্টকে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন বিসিবির পরিচালক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। 

মৃত্যুকালে রাইসউদ্দিনের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তিনি এই প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল অব্দি। এরপর ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ছিলেন বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

বুধবার এক শোক বার্তায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট যখন ভুগছিল তখন রাইসউদ্দিন আহমেদ হাল ধরেন। স্বার্থ ছাড়া তার মতো সংগঠক ক্রিকেটে পরিশ্রম করেছেন বলে ক্রিকেট আজ এ পর্যায়ে আমরা। ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে তার রুহের আত্মার মাগফিরাত ও তার পরিবারের প্রতি গভীর সমাবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করছি।’

রাইসউদ্দিন আহমেদের চেষ্টাতেই ১৯৭৭ সালে লন্ডনের মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব বাংলাদেশে খেলতে আসে। রাজশাহী ও চট্টগ্রামে আঞ্চলিক দুটি দলের বিপক্ষে দুটি দুই দিনের ম্যাচ খেলে দলটি ঢাকা স্টেডিয়ামে ৭ জানুয়ারি থেকে একটি তিন দিনের ম্যাচ খেলে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ‘বাংলাদেশ’। সেবারই বাংলাদেশ নামে কোন একটি দল প্রথমবারের মতো ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে নামে।

মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব দল ইতিবাচক প্রতিবেদন দেওয়ার পরই আইসিসি সহযোগী সদস্য হওয়ার পথ খুলে যায় বাংলাদেশের।

রাইসউদ্দিন ছিলেন সব্যসাচী এক ক্রীড়াবিদ। এক ফুটবল, ক্রিকেট, সফটবল, বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন সব খেলেছেন তিনি। নটরডেম কলেজ থেকে ইন্টার কলেজ স্পোর্টসে হাই জাম্প, লং জাম্প, ১০০ ও ২০০ মিটারে ফার্স্ট হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেন কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতে

ক্রিকেট বোর্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশ বিমানেরও বড় কর্মকর্তা ছিলেন রাইসউদ্দিন। আলী আহসান বাবু, সানোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে ক্রিকেটার তার মাধ্যমে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ বিমানে।

এটি/এনইউ