গুরবাজের ছক্কার বিশ্বরেকর্ডে আফগানিস্তানের জয়
রেকর্ডের পথে গুরবাজ/ছবি: ক্রিকইনফো
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২৮৭/৯ (গুরবাজ ১২৭, আহমাদি ৩৮, রশিদ ৫৫; ম্যাকব্রাইন ২৯-৫)
আয়ারল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৭১/৯ (স্টার্লিং ৩৯, ক্যাম্পার ৩৯, টাকার ৮৩; নাভিন ৬৮-৩, নাইব ৩৬-১, নবি ৪৫-১, রশিদ ৫৬-২)
ফল: আফগানিস্তান ১৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আফগানিস্তান।
অভিষেকে ঝড় তোলাটা নতুন কিছু নয় রহমানউল্লাহ গুরবাজের জন্য। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে যে ঝড়টা তুললেন গুরবাজ, তা ভেঙে দিলো অভিষেকে সবচেয়ে বেশি ছক্কার আগের বিশ্বরেকর্ডও। আয়ারল্যান্ডকে ‘ঘরের মাটিতে’ প্রথম ওয়ানডেতে ১৬ রানে হারিয়ে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে শুভ সূচনা করেছে আফগানিস্তান।
বিজ্ঞাপন
সিরিজটি আছে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের অধীনে, তাই দুই দলই একে দিচ্ছে বাড়তি মনোযোগ। আয়ারল্যান্ড তো কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে খেলেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও! সেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেই আফগানিস্তান নামিয়ে দেয় ‘আনকোরা’ গুরবাজকে।
অভিষিক্ত এই ওপেনারের শুরুটা বেশ নড়বড়ে ছিল। প্রথম রানটা পেতে লেগেছে নয় বল। তবে ব্যারি ম্যাককার্থির বলটা পুল করে কাউ কর্নার দিয়ে সীমানাছাড়া করার পরই যেন রানের ফোয়ারা ছুটলো গুরবাজের ব্যাটে। খেলেন আটটি চার ও নয়টি ছক্কা। ওয়ানডের ইতিহাসে অভিষেকেই এতো বেশি ছক্কা নেই আর কারো, নভোজ্যোত সিধুর অভিষেকে ৫ ছক্কার রেকর্ডও ভেঙে যায় মাঝপথে। আফগানদের হয়ে এক ইনিংসে এর চেয়ে বেশি ছয় নেই আর কারো!
এমন ইনিংসে ওয়ানডে অভিষেকেই সেঞ্চুরি পাওয়া প্রথম আফগান ব্যাটসম্যান বনে যান তিনি। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সর্বোচ্চ ইনিংসটিও চলে যায় তার দখলে। তবে কিছুটা আক্ষেপও হতে পারে তার। ১২৭ বলে ১২৭ রান করে যখন সাজঘরে ফিরছেন গুরবাজ, ডেসমন হেইন্সের অভিষেকে ১৪৮ রান থেকে যে ছিলেন কেবল ১৯ রান দূরে! এর আগে টি-টোয়েন্টি অভিষেকেও বাংলাদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঝড়ো ৪০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন গুরবাজ।
বিজ্ঞাপন
তবে তার প্রলয়নাচনের মাঝেও বৃহস্পতিবার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন টুটি চেপে ধরেছিলেন স্বাগতিকদের। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে তিনশো ছোঁয়া রানও এক সময় কষ্টসাধ্য মনে হচ্ছিল আফগানদের সামনে। আফগানিস্তান শেষতক তিনশো ছোঁয়া পুঁজি পায় রশিদ খানের ৫ ছক্কা আর ২ ছয়ে ৩০ বলে ৫৫ রানের ইনিংসে।
২৮৮ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে শুরুটা যতো নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন ছিল আয়ারল্যান্ডের ততো নিখুঁত হয়নি। নাভিন উল হকের তোপে আফগানরা দ্রুতই কেভিন ও’ব্রায়েন ও অ্যান্ডি বালবার্নির উইকেট পেয়ে যায়। পল স্টার্লিং আর হ্যারি টেক্টর ৫০ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলান। তবে এরপর ২ রানের ব্যবধানে দু’জনকে হারিয়ে আবারও বিপদে পড়ে সফরকারী আয়ারল্যান্ড।
দলের হাল ধরার দায়িত্ব পড়ে কার্টিস ক্যাম্পার ও লর্কান টাকারের উপর। সেটা ভালোভাবে সামলালেও ক্যাম্পারকে ফিরিয়ে তাদের ৮৬ রানের জুটি ভাঙেন মুজিব-উর-রহমান। টাকার অবশ্য একাই লড়ে গেছেন, করেছেন আয়ারল্যান্ডের একমাত্র অর্ধশতকটি। তিন চার তিন ছক্কায় ৯৬ বলে করেছেন ক্যারিয়ার সেরা ৮৩ রান। তবে দলের জন্য সেটা যথেষ্ট হয়নি। শেষের লড়াইটা ঠিকঠাক করতে না পেরে ১৬ রানে হেরে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে আইরিশরা। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আজ শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলবে দলটি।
এনইউ