‘সোনালী দিনের ঝলক’ দেখিয়ে বিলবাওকে উড়িয়ে দিলো বার্সা
‘এই ম্যাচ যদি না শেষ হয়/তবে কেমন হতো তুমি বলো তো?’ গৌরিপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া মিষ্টি প্রেমের গানটা একটু বদলে বার্সা ভক্ত-সমর্থকরা চাইলে গাইতেই পারেন। চলতি মৌসুমে দারুণ ছন্দে থাকা অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে যে ঢঙে ছড়ি ঘুরিয়েছে বার্সেলোনা তাতে এতটুকু আদিখ্যেতা করাই যায়। মাঠে সোনালী দিনের ঝলক ফিরিয়ে এনে যে প্রতিপক্ষের জালে গুনে গুনে ৪ গোল জড়িয়েছে জাভি হার্নান্দেজের দল!
কোচ জাভি মাঝ মৌসুমে দলের দায়িত্বে এসে কিছু মৌলিক বিষয় বদলে দিতে চেয়েছিলেন। বল পায়ে না থাকলে সাঁড়াশি আক্রমণ, ৫ সেকেন্ডে বল জেতার চেষ্টা, বল পায়ে মাঠে ত্রিভুজ তৈরি করে পাসের বিকল্প বাড়ানো, ইত্যাদি ইত্যাদি। মোদ্দা কথা, ইয়োহান ক্রুইফ, পেপ গার্দিওলাদের যুগের ফুটবল স্বাদটাই ফেরাতে চেষ্টা করেছিলেন ন্যু ক্যাম্পে। সেটাই দায়িত্ব নেওয়ার চতুর্থ মাসে এসে ফল দিচ্ছে বার্সাকে, দেখাচ্ছে সোনালী দিন ফেরানোর স্বপ্নও। যেমন দিলো আজ, শুরু থেকেই।
বিজ্ঞাপন
দ্রুত বল জেতার কারণে মাঝমাঠে দখল বেড়েছে, গোলের সুযোগ আসছে বেশি বেশি। তবে প্রথমার্ধে সুযোগ নষ্টের খেসারত দিয়ে গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৭ মিনিট পর্যন্ত।
এ পর্যন্ত বিলবাও গোলরক্ষক উনাই সিমনও বার দুয়েক নিশ্চিত গোলের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন সফরকারীদের। করলেন ৩৭তম মিনিটের কর্নারটাতেও। দানি আলভেসের নেওয়া কর্নারে পিকের করা দারুণ এক হেডার হাত ছুঁইয়ে সেভ দিয়েছিলেন, তবে ফিরতি চেষ্টায় পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াংয়ের দারুণ ভলিটা আর ফেরাতে পারেননি। তাতেই বার্সা এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। বিরতিতেও যায় এই ব্যবধানে এগিয়েই।
বিজ্ঞাপন
দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুর ৪৫ মিনিটের মতো আধিপত্যই দেখিয়েছে বার্সা। তবে গোলের দেখা মিলছিলো না। ৬৭ মিনিটে ফেররান তরেস আরও একটা দারুণ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। তাতে বিলবাওয়ের ম্যাচে ফেরার আশাটাও বেঁচে ছিল বৈকি!
তবে বিলবাওয়ের বেঁচে থাকা আশাটা এরপর শেষ করেন উসমান দেম্বেলে। ৬৮ মিনিটে মাঠে আসার পাঁচ মিনিটের মধ্যে করে বসেন দারুণ এক গোল। ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের বাড়ানো বল নিয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পাশ থেকে দুরূহ কোণ থেকে করেন চোখ ধাঁধানো এক ফিনিশ। ব্যবধান দ্বিগুণ করে বার্সা।
দেম্বেলে-জাদু সেখানেই শেষ হয়নি। ৮৯ মিনিটে সতীর্থ লুক ডি ইয়ংকে দিয়ে করালেন আরেকটা গোল। মাঝমাঠ থেকে পেদ্রি গঞ্জালেসের অসাধারণ এক লং বল নিয়ে চলে যান ডান প্রান্ত ধরে। বক্সে থাকা লুক ডি ইয়ংকে লক্ষ্য করে বাড়ান ক্রস, তাতে মাথা ছুঁইয়ে গোল পান গ্রীষ্মকালীন দলবদলের শেষ দিনে দলে আসা এই স্ট্রাইকার।
এর মিনিট চারেক পর যোগ করা সময়ে প্রতিপক্ষের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠোকেন মেম্ফিস ডিপাই। সে গোলের নিয়ামকও দেম্বেলেই। ডান প্রান্ত থেকে তার নিচু ক্রসে গোলটা করেন ডাচ ফরোয়ার্ড। এর ফলে চলতি মাসে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো প্রতিপক্ষকে চার গোলের মালা পরায় বার্সেলোনা।
এই জয়ের ফলে লা লিগা পয়েন্ট টেবিলের তিনে থাকা রিয়াল বেটিস থেকে এক পয়েন্টের দূরত্বে চলে এসেছে বার্সা, ম্যাচ খেলেছে একটি কম। বর্তমানে ২৫ ম্যাচ থেকে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে আছে কোচ জাভি হার্নান্দেজের দল।
এনইউ