ব্রেন্টফোর্ডের ব্যবধান বাড়িয়ে নরগার্ডের উচ্ছ্বাস, পেছনে আর্সেনাল বিধ্বস্ত/ইউরোস্পোর্ত

গেল মৌসুমটা মোটেও ভালো কাটেনি আর্সেনালের। লিগ শেষ করেছে আটে থেকে। তাতে ২৫ বছরের ভেতর এই প্রথম কোনো ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় খেলছে না গানাররা। সেই আর্সেনালের শুরুটা এবারও হলো বিস্মরণযোগ্য। এবার ৭৪ বছর পর লিগে ফেরা ব্রেন্টফোর্ডের কাছেই ২-০ গোলে হেরে বসেছে কোচ মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা।

অথচ গত রাতে শুরু হওয়া প্রিমিয়ার লিগ কি দারুণ আশাই না দেখাচ্ছিল কোচ আর্তেতাকে। তার তারুণ্য নির্ভর দল রোমাঞ্চে ভরা, আর প্রাণশক্তিতে ভরপুর, এমনটাই বলেছিলেন আর্সেনালের স্প্যানিশ কোচ। কিন্তু মাঠে তার ছাপ মিলল কই?

ইংলিশ লিগের শীর্ষ আসরে দুই দলের শেষ লড়াইটা যেবার হয়েছে, সেটা ছিল অর্ধশতাব্দিরও আগে। ১৯৪৭ সালে। তবে সব মিলিয়ে সর্বশেষ লড়াইটা হয়েছিল বছর তিনেক আগে, সেবার লিগ কাপের দুটো ম্যাচেই শেষ হাসি হেসেছে আর্সেনাল।

তবে ম্যাচে তার ছাপ পড়েছে সামান্যই। গানাররা ম্যাচটা শুরু করেছিল ধীরলয়ে। জবাবটা শুরুতে দিতে পারেনি ব্রেন্টফোর্ডও। তবে ম্যাড়মেড়ে ম্যাচটা প্রথম গোলের দেখা পায় ২২তম মিনিটে। কর্নার থেকে ভেসে আসা বলটা ঠিকঠাক বিপদমুক্ত করতে পারেনি আর্সেনাল রক্ষণ, তারই সুযোগ নিয়ে স্বাগতিক ব্রেন্টফোর্ডকে এগিয়ে দেন সার্জিও কানোস। 

এই গোলটা শেষ করেছে এবারই চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে উঠে আসা ব্রেন্টফোর্ডের ৭৪ বছরের অপেক্ষা। আর আর্সেনালকে দিয়েছে হারার আগেই হারের বড় শঙ্কা। কারণ প্রথমে গোল হজম করা শেষ ১৫ ম্যাচেই যে জিততে পারেনি দলটি। 

সেই শঙ্কা থেকেই কিনা, গানারদের রক্ষণ হয়ে পড়ে আরও নড়বড়ে। ৩১ আর ৪৪ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগই তৈরি করেছিল ব্রেন্টফোর্ড। ফলে আর্সেনাল বিরতিতে যায় ম্যাচে ফিরে আসার ক্ষীণ আশা নিয়ে।

এরপর সময় যত গড়িয়েছে, এক গোল ধরে রাখার লক্ষ্যে ব্রেন্টফোর্ড রক্ষণে সেঁধিয়ে গেছে আরও। তবে আর্সেনালকে ৬৫ মিনিটে গোলটা প্রায় এনেই দিয়েছিলেন গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের দারুণ ফ্লিকটা যদি লক্ষ্যে থাকত, সমতা ফিরিয়েই ফেলত আর্সেনাল। সেই শুরু, সেই শেষ। আর্সেনাল আর তেমন আক্রমণই সৃষ্টি করতে পারেনি ম্যাচে। 

উল্টো ৭৩ মিনিটে হজম করে বসে গোলটা, যা গানারদের সব আশা শেষ করে দিয়েছে নিমিষেই। গোলে রক্ষণের দোষটাই যেন বেশি। স্বাগতিকদের লম্বা থ্রো ইন কাছের পোস্ট বা দুরের পোস্ট, কোথাওই কেউ বিপদমুক্ত করতে পারেননি, তারই সুযোগ নিয়ে ব্রেন্টফোর্ডের ব্যবধান বাড়িয়ে দেন ক্রিশ্চিয়ান নরগার্ড। 
ফলে এক যুগ পর প্রিমিয়ার লিগের অভিষেকে কোনো দল পেল জয়ের স্বাদ। ২০০৮-০৯ মৌসুমে হাল সিটি জিতেছিল প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে।

‘অভিষেক’ এ কারণে, প্রিমিয়ার লিগ নামকরণ হয়েছে ১৯৯২ সালে। এরপর থেকে যে দলই এখানে খেলতে আসে, ‘অভিষেক’ হিসেবেই ধরা হয় সেটা।
ব্রেন্টফোর্ডের আগমনে দুটো মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলে প্রিমিয়ার লিগ। ৫০তম দল হিসেবে অভিষেক হয় দলটির, আর তাদের মাঠ ব্রেন্টফোর্ড কমিউনিটি স্টেডিয়ামের অভিষেক হয় ৬০তম প্রিমিয়ার লিগ মাঠ হিসেবে।

ম্যাচটা আরও এক কারণে বিশেষ কিছু। এই ম্যাচ দিয়েই যে ধারণক্ষমতার সমান দর্শক প্রবেশের অনুমতি মিলেছিল প্রিমিয়ার লিগে। সেই উপলক্ষটাই ব্রেন্টফোর্ড স্মরণীয় করে রাখল দারুণ এক জয় দিয়ে।

এনইউ