মাঠের লড়াইয়ের আগেই ক্লাব-ফেডারেশন চিঠি চালাচালিতে জমে উঠেছে ফেডারেশন কাপ। বসুন্ধরা কিংস দুইটি কারণ দেখিয়ে ফেডারেশন কাপে না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বাফুফেকে চিঠি দিয়েছিল। সেই দুই কারণের প্রথমটি চিঠি দেওয়ার ঘণ্টা চারেক পরেই সমাধান হয়েছে।

কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচগুলো আগের ফরম্যাট অনুযায়ী এ বনাম সি এবং বি বনাম ডি-তে খেলা হবে। ফরম্যাটের সঙ্গে বসুন্ধরা কিংসের আরেকটি দাবি ছিল কমলাপুর স্টেডিয়ামে খেলা আয়োজন না করা। ওই দাবিটি রাখতে পারেনি ফেডারেশন। আজ (শুক্রবার) রাতে সংশোধিত ফিকশ্চারে কমলাপুর স্টেডিয়ামেই টুর্নামেন্ট রেখেছে। তবে আজকের ফিকশ্চারের টুর্নামেন্টের সময়সূচি এক দিন বাড়ানো হয়েছে। আগে কোয়ার্টার ফাইনাল ছিল বছরের প্রথম দিন। আজকের সূচিতে কোয়ার্টার ফাইনাল রাখা হয়েছে ২ জানুয়ারি। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল এক দিন করে পিছিয়েছে। 

প্রথম দাবি পূরণ হওয়ার পর বসুন্ধরা কিংসের সিদ্ধান্ত আগের অবস্থাতেই আছে বলে জানালেন সভাপতি ইমরুল হাসান, ‘ক্রমাগত অনিয়মের পঞ্জিভূত ক্ষোভে আমাদের এই সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত এসেছে আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে, লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম ভাইকেও বিষয়টি বলেছি।’ কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বাফুফেরও সহ-সভাপতি। তার এমন বক্তব্যে ছোট ক্লাবগুলোর আর্তনাদ কত করুণ সেটা সহজেই অনুমেয়। 

ফিকশ্চারের ফরম্যাট পরিবর্তন হওয়ায় লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি আশাবাদী বসুন্ধরা কিংস খেলায় অংশগ্রহণ করবে, ‘ফিকশ্চার সংক্রান্ত বিষয়টি তারা চিহ্নিত করেছিল এবং এটি সংশোধিত হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও অনেক বিষয়ে তাদের ক্লাব সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি তারা খেলবে। ফেডারেশন কাপের সঙ্গে এএফসি কাপের বিষয় জড়িত। তাদের বিনিয়োগ ও দেশের ফুটবলের স্বার্থে খেলায় অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করি।’ 

কমলাপুরে খেলা চালানোর বিষয়ে লিগ কমিটির চেয়ারম্যানের মন্তব্য, ‘ঢাকার মধ্যে আর মাঠ নেই। ঢাকার বাইরে ১২ দলের আবাসন, অনুশীলন সংকট ও নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সব বিচার-বিবেচনা করেই কমলাপুরে ফেডারেশন কাপ।’

ইনজুরির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই টার্ফেই সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ৷ মেয়েরা তো তেমন ইনজুরিতে পড়েনি। আবার স্বাধীনতা কাপেও এই সংখ্যা খুব বেশি নয়।’

ফেডারেশন কাপ অংশগ্রহণমূলক টুর্নামেন্ট। ক্লাবের এন্ট্রি প্রত্যাহার করার অধিকারও রয়েছে। তবে এই টুর্নামেন্টর পৃষ্ঠপোষক বসুন্ধরা গ্রুপ। কিংস না খেললে টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করবে তারা করবে কি না এই প্রসঙ্গে বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রুপের কর্মকর্তা ইমরুল হাসানের বলেছেন, ‘আমাদের না খেলার সাথে স্পন্সরের বিষয়টি সর্ম্পকিত নয়। স্পন্সর সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।’

কিংস ফেডারেশন কাপ শুরু হওয়ার আগে থেকেই কমলাপুর টার্ফে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল। গতকাল অনুষ্ঠিত ড্র অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা কিংসের চিঠি নিয়ে লিগ কমিটির চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করেছিলেন। লিগ কমিটির চেয়ারম্যান এর উত্তর দিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের প্রতিনিধির সামনেই এবং সেই প্রতিনিধি ড্র অনুষ্ঠানে ড্রও তুলেছেন। 

কমলাপুর স্টেডিয়ামে খেলা হচ্ছে এটা জেনেও ড্র অনুষ্ঠানে বসুন্ধরার অংশগ্রহণ কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘আমরা আপত্তি জানিয়ে ড্র অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা রক্ষা করতে গিয়েছিলাম।’

বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বাফুফে সহ-সভাপতিও। প্রথমবার নির্বাচন করতে এসে তিনি চার সহ-সভাপতির মধ্যে প্রথম সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। কিংসের ক্লাব সভাপতি হিসেবে তার না খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকলেও বাফুফে সহ-সভাপতি হিসেবে আবার কিছুটা সাংঘর্ষিকও। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি একটি ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত এজন্য লিগ কমিটির সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বাফুফে সহ-সভাপতি হিসেবে অন্য দায়িত্ব পালন করছি।’

এজেড/এমএইচ