নিজেদের মাঠে ব্রাজিল তখন মুখোমুখি প্যারাগুয়ের। তখন পর্যন্ত গোল না পেলেও বেশ দাপুটে পারফর্ম্যান্সই উপহার দিচ্ছিল কোচ তিতের শিষ্যরা। তবে তখনই গ্যালারিতে ঘটল ঘটনাটা। ভক্তদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলো, এরপর রীতিমতো মারামারিতেই রূপ নিল তা। এমন ঘটনার পর ২১ জন সমর্থককে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ।

মিলিটারি পুলিশ জানাচ্ছে, এই দাঙ্গা মূলত সৃষ্টি হয়েছে ক্লাব ফুটবলকে কেন্দ্র করে। অ্যাটলেটিকো মিনেইরাও ও ক্রুজেইরোর সদস্য গোষ্ঠীর মধ্যে এই মারামারি হয়। তৎক্ষণাৎ পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তবে তখন জানানো হয়, ম্যাচ শেষে এই ঘটনার তদন্ত করা হবে।

এই দাঙ্গার মাঝে পড়ে যাওয়া একজনকে রীতিমতো আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে হয়েছে স্টেডিয়ামের স্বেচ্ছাসেবীদেরকে। জ্ঞান না হারালেও তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যদিও এরপর সেই আহত ব্যক্তিকে নিয়ে আর কোনো খবর জানায়নি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম। 

সেই দাঙ্গায় যারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না, সেই ভক্তরা দাঙ্গা শুরুর পরপরই দৌড়ে পালান ঘটনাস্থল থেকে। মিনেইরাও গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে ঘটেছিল এই ঘটনা, সেই সময় দাঙ্গায় অংশ না নেওয়া ভক্তদেরকে দৌড়ে পাশের গ্যালারি রোজোতে অবস্থান নিতে দেখা যায়। 

তাদেরই একজন ছিলেন গুস্তাভো লোপেজ, ১১ বছর বয়সী কন্যাসন্তানকে নিয়ে খেলা দেখতে গিয়ে রীতিমতো আতঙ্কেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এই দাঙ্গাটা আমি দেখেছি। আমার মেয়ে পুরোপুরি ভয়ই পেয়ে গিয়েছিল। আমি তখন সবচেয়ে নিরাপদ জায়গাটার খোঁজে তাকে নিয়ে দৌড়াচ্ছিলাম। এমন কিছু আজকের দিনে আপনি সাধারণত দেখবেন না। আমি মিনেইরাওতে দুই দলের ভক্তদের সঙ্গেই এসেছিলাম, কোনো প্রকারের দাঙ্গায় জড়াতে চাইনি আমি। এমন কিছুর কোনো অর্থ নেই।’

স্টেডিয়ামে এদিন উপস্থিত ছিলেন ৪০০০০ হাজার দর্শক। তবে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড হওয়ায় সেই দাঙ্গার কাছাকাছি ছিলেন অনেক বয়োবৃদ্ধ ও শিশু দর্শক। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, এই দাঙ্গা শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট পর মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। দাঙ্গায় জড়িত সন্দেহে ২১জনকে আটক করা হয় তখন।  

এই ঘটনায় অবশ্য মিনেইরাও কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছে। তাদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মিনেইরাও দুঃখ প্রকাশ করছে। এ জাতীয় সহিংসতা, যা ব্রাজিলের ভক্ত-সমর্থকদের আনন্দঘন মূহুর্তে ব্যাঘাত ঘটায়, তার প্রতি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা।’

এনইউ/এটি