১৯৮৪ সাল থেকে বাংলাদেশ অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরে বাংলাদেশ অংশগ্রহণে তেমন লক্ষ্য থাকে না। এবার বাংলাদেশ থেকে ৬ জন ক্রীড়াবিদ চারটি ডিসিপ্লিনে অংশ নেবেন। অন্য আসরগুলোর তুলনায় এবারের অলিম্পিক যাত্রা একটু স্বপ্নের মোড়কে বেধেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন।

টোকিও অলিম্পিকের বাংলাদেশের শেফ দ্য মিশন শেখ বশির আহমেদ মামুন আজ (বুধবার) রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমাদের রোমান সানা নিজ যোগ্যতায় টোকিও অলিম্পিকে জায়গা করে নিয়েছি। তাকে নিয়ে আমরা ভালো কিছু আশা করছি।’ 

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ভালো কিছুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে রোমান ও অ্যাথলেটকে চাপমুক্ত রাখার পরিকল্পনা, ‘আমাদের যদি কোনো পদক আসে সেজন্য অলিম্পিকের একটি নীতিমালা আছে সেই অনুযায়ী পুরস্কৃত হবেন ক্রীড়াবিদরা। আমরা তাদের বলেছি, টাকার অঙ্ক নিয়ে ভেব না তোমরা পদক পেলে পুরো দেশবাসী তোমাদের নিয়ে আনন্দ করবে।’ 

করোনার জন্য অলিম্পিকে যাওয়ার আগে খেলোয়াড়দের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আনা হয়নি। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন আরচ্যার রোমান সানা ও শ্যুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকী। রোমান সানা নিজের উপর আস্থা রাখতে বললেন, ‘প্রতিদিন কঠোর অনুশীলন হচ্ছে। ফাইনাল ম্যাচগুলো হয় যেভাবে, সেভাবে আলাদা অনুশীলনের একটা ব্যবস্থা হয়েছে। ওয়ার্ড কাপ স্টেজ ২-৩ এ আমাদের ফলাফল ভালো ছিল। ’রোমান ব্যক্তিগত ইভেন্ট ছাড়াও মিশ্র বিভাগে দিয়া সিদ্দিকীর সঙ্গেও খেলবেন। 

আরচ্যারি ছাড়া দুই জন যাচ্ছেন শুধু সাঁতারে। দুই সাঁতারুই অন্য দেশ থেকে গিয়ে টোকিও যাবেন। সাঁতারু আরিফ ফ্রান্সে প্রশিক্ষণে আছেন। আরেক সাতারু লন্ডন প্রবাসী জুনাইনা। আরিফ তিন বছর উচ্চতর প্রশিক্ষণ করলেও তাকে নিয়ে খুব বেশি আশা করতে পারছে না বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। 

শুটিং ও অ্যাথলেটিক্স থেকে যাচ্ছেন আব্দুল্লাহ হেল বাকী এবং জহির রায়হান। এই দুই জনের উপর স্বাভাবিক প্রত্যাশা নিজের সেরা স্কোর ও টাইমিংয়ের উন্নতি। অভিজ্ঞ শুটার বাকী ও সরাসরি কোয়ালিফাইল করা রোমানকে নিয়ে পতাকা বহন করানোর পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের। 

দুই জনেরই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দিন খেলা থাকায় তাদের পরিবর্তে সাঁতারু আরিফুল ইসলাম উদ্বোধনের দিন বাংলাদেশের পতাকা বহন করবেন। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা তার টোকিওগামী দলের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘যদি তারা সর্বোচ্চটুকু উজাড় করে দিতে পারে, তাহলে দেশের জন্য মাইল ফলক আনতে পারবে বলে বিশ্বাস করি। এ মুহূর্তে সুস্থ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি তারা সুস্থ থেকে সেরাটা উজাড় করে দিতে পারবে।’

টোকিওতে বাংলাদেশ দল খুব কড়া বিধিনেষেধের মধ্যে থাকবে। যে অ্যাথলেটের খেলা শেষ বা গেমস থেকে বিদায় নেওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে টোকিও ত্যাগ করতে হবে। ১৬ জুলাই বিকেলে আরচ্যারি ও শুটিং দল বাংলাদেশ ত্যাগ করবে। সাঁতারুরা যথাক্রমে লন্ডন ও প্যারিস থেকে যাবেন। অ্যাথলেট জহির রায়হান যাবেন ২৫ জুলাই।
 
অলিম্পিকগামী বাংলাদেশের ৬ অ্যাথলেট
আরচ্যারি: রোমান সানা, দিয়া সিদ্দিকী।
সাতার: আরিফুল ইসলাম, জুনাইনা আহমেদ।
শ্যুটিং: আব্দুল্লাহ হেল বাকী।
অ্যাথলেটিক্স: জহির রায়হান।

এজেড/এমএইচ