ফাইল ছবি

প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার খাতায় কিছু নিয়মকানুন মেনে উত্তর লেখা উচিত। পরীক্ষার খাতায় যেভাবে উত্তর লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যায় তা নিচে আলোচনা করা হলো।

কভার পৃষ্ঠার তথ্য পূরণ : তথ্য পূরণ করা পরীক্ষার্থীর প্রথম কাজ। রোল নম্বর, রেজিষ্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড, কেন্দ্রের নাম প্রভৃতি তথ্যগুলো পূরণ করে বৃত্তভরাট করতে হবে। মনে রাখবে এসব তথ্য ভুল হলে তোমার রেজাল্ট স্থগিত হয়ে যাবে। অবশ্যই এক্ষেত্রে কালো বলপেন ব্যবহার করবে। কোন ভুল-ত্রুটি হলে পরিদর্শককে অবগত করবে।

মার্জিন দেয়া : প্রতিটি পৃষ্ঠার বামদিকে এক ইঞ্চি জায়গা বাদ দিয়ে মার্জিন করবে। প্রশ্ন দেয়ার আগেই এ কাজটি সেরে রাখবে। বামদিকের একইঞ্চি জায়গা পরীক্ষকের জন্য বরাদ্দ। এখানে পরীক্ষক উত্তর মূল্যায়নপূর্বক নম্বর বসাবেন।

রঙিন কলমের ব্যবহার : পরীক্ষার খাতায় রঙিন কলম ব্যবহার না করাই উত্তম। কারণ অনেক পরীক্ষক রঙিন কলমের ব্যবহার পছন্দ করেন না। ব্যবহার করলেও হালকা রঙের কলম ব্যবহার করতে পারো। লাল কালির কলম ব্যবহার করা নিষেধ। কালো কালি দিয়ে প্রশ্নোত্তর লিখবে।

পৃষ্ঠায় নম্বর  দেয়া : প্রতিটি পৃষ্ঠার ওপরে এককোনায় ছোট করে খাতার পৃষ্ঠা নম্বর লিখবে। অতিরিক্ত উত্তরপত্র নিলেও পৃষ্ঠা নম্বর  দেবে। এতে পরীক্ষকের খাতা দেখতে সুবিধা হয়। পরীক্ষা শেষে অতিরিক্ত খাতা পিন-আপ করতেও সময় কম লাগে।

উত্তরে ওভার রাইটিং করবে না : উত্তর লেখার সময় ওভার রাইটিং করবে না, কোন শব্দ বা বাক্য ভুল হলে তা একটানে কেটে ওপরে বা ডানপাশে সঠিক কথাটি লিখবে। ওভার রাইটিং করলে, পরীক্ষক বিরক্ত হয়। ফলে পরীক্ষার্থীকে নম্বর কম দিতে পারেন।

দু'লাইনের মাঝে ফাক : অনেক পরীক্ষার্থী দু'লাইনের মাঝে ফাঁক রাখে বেশি। তারা এক লাইনে শব্দ লিখে পাঁচটি এবং প্রতি পৃষ্ঠায় মাত্র ৭/৮ লাইন উত্তর লিখে। পরীক্ষক এ ধরনের পরীক্ষার্থীকে অতিচালাক মনে করে। তারা পরীক্ষার খাতাভারী করে। কিন্তু নম্বর কম পায়।

পয়েন্ট করে লেখা ও আন্ডারলাইন দেয়া : বেশকিছু উত্তর থাকে পয়েন্ট ভিত্তিক, এ ধরনের উত্তরে পয়েন্ট দেবে এবং প্রতিটি পয়েন্টের নিচে আন্ডারলাইন করে দেবে। এতে পরীক্ষকের বেশি নম্বর দেয়ার মানসিকতা তৈরি হয়।

প্রশ্নের সঠিক ক্রমিক নম্বর লেখা : অনেকেই প্রশ্নের ক্রমিক নম্বর লিখতে গিয়ে ভুল করে ফেলে। ৭ নম্বর এর জায়গায় ৯ নম্বর, আবার ৯ নম্বরের পরিবর্তে ৭ নম্বর লিখে ফেলে। এ ধরনের ভুল করলে পরীক্ষক বিরক্ত হয়। তাই ঠান্ডা মাথায় প্রশ্নোত্তরের সঠিক ক্রমিক নম্বর লিখবে।

উত্তর সুন্দর করে লেখা : হাতের লেখা সুন্দর হতেই হবে, এমন নয়। তবে লেখা অবশ্যই পড়ার উপযোগী হতে হবে। পরীক্ষক যদি প্রশ্নোত্তর পড়তেই না পারেন, তাহলে নম্বর দিবেন কিভাবে? তাই উত্তর লেখার সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে লিখবে।

বাংলা-ইংরেজি উভয় ভাষার ব্যবহার  করবে না : অনেক পরীক্ষার্থী আছে পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য বাংলা-ইংরেজি উভয় ভাষাই ব্যবহার করে থাকে। বিশেষ করে লেখকের সংজ্ঞা দেয়ার সময় এ কাজটি করে থাকে। অথচ এ জন্য কোনো অতিরিক্ত নম্বর পাওয়া যায়না।

খাতায় পৃষ্ঠা খালি রাখবে না : কোনো কোনো পরীক্ষার্থী। ভূলে এক পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে অন্য পৃষ্ঠায় চলে যায়। এক্ষেত্রে করনীয় হলো খালি পৃষ্ঠায়ক্রসচিহ্ন দেয়া অথবা ঐ পৃষ্ঠায় পরিদর্শকের স্বাক্ষর নেয়া। উত্তরপত্রে পৃষ্ঠা খালি রাখা ঠিক নয়।

বানিয়ে প্রশ্নের উত্তর লিখবে না : প্রশ্নোত্তর বানিয়ে লিখবে না। কেননা বানিয়ে লেখা উত্তর যদি প্রশ্নের সাথে না মিলে, তখন পরীক্ষক বিরক্ত হন। পরীক্ষার্থীরা সাধারনত  প্রশ্ন কমন না পড়লে এ রকম করে থাকে। এটা মোটেই ঠিক নয়।

প্রশ্নের ধারাবাহিকতা ঠিক রেখে উত্তর লিখবে : পরীক্ষার খাতার প্রশ্নোত্তরের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে। যেমন- ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ২ নম্বর, আবার ৭ নম্বর লিখে ৩ নম্বর, এভাবে উল্টা-পাল্টা উত্তর লিখলে ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। এতে পরীক্ষক বিরক্ত হন। ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নোত্তর লিখলে পরীক্ষক খুশী হন। বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য খাতার মধ্যে বৈচিত্র থাকতে হবে। উত্তরের মধ্যেও থাকতে হবে নতুনত্ব। নতুন কিছু দেখানোর মতো বৈশিষ্ট থাকলেই খাতাটির ব্যাপারে পরীক্ষকের কৌতহল জন্মাবে এবং বেশি পরীক্ষার্থীর বেশি নম্বর পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এমকে