চবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি

প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অনশন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৯ জন শিক্ষার্থী। টানা ৪৮ ঘণ্টা অনশনে সবারই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এরমধ্যে সাতজনকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে এই অনশন কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
কর্মসূচিতে বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া, শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহজাহান, নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (ইউপিডিএফ-সমর্থিত) সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা রয়েছেন। তাদের মধ্যে ধ্রুব বড়ুয়া, সুদর্শন চাকমা ও সুমাইয়া শিকদার বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে রয়েছেন।
আরও পড়ুন
প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের মানসম্মত চিকিৎসার নিশ্চয়তা, ক্যাম্পাসে নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা, হামলার ভিডিও প্রকাশকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, প্রকৃত অপরাধীদের বিচার, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন—এই সাত দাবিতে অনশন করছেন তারা।
অনশনের প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তিনি অনশন ভেঙে তাদের আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। তবে অনশনকারীদের দাবি, প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা কোনো আলোচনা বা প্রস্তাব মানবেন না।
এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা আমরণ অনশনে চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলোচনার জন্য ডেকেছিল তাদের, কিন্তু অনশনরত শিক্ষার্থীরা তা মানছেন না।
মেডিকেল সেন্টারে থাকা ধ্রুব বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের এখানে প্রায় সবাই এখন অসুস্থ। প্রশাসন এখনো আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে পারছেন না। অপরাধকে তারা অপরাধ বলতে পারছেন না। তারা আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপার নিশ্চিত করতে পারছেন না। প্রশাসন এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকা থেকে যেসব শিক্ষার্থী ঘরছাড়া হয়েছেন তাদের আবাসনের জন্য রূপরেখা দিতে পারছেন না। সুতরাং আমি মনে করি প্রশাসন দায়িত্বে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, আমি প্রতিনিয়ত দায়িত্বরত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থার কথা জানাচ্ছি।
আতিকুর রহমান/এএমকে