জাবিতে চ্যাটজিপিটি দিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, ৭ দিনের কারাদণ্ড

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তি (চ্যাটজিপিটি) ব্যবহার করে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। গত ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ডি ইউনিটের পরীক্ষায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেধাতালিকায় স্থান পেলেও, আজ সোমবার এ ইউনিটের পরীক্ষায় পুনরায় জালিয়াতি করতে গিয়ে এক শিক্ষার্থী হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেন।
আজ সোমবার (২৯ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদভুক্ত এ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা চলাকালে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত শিক্ষার্থীর নাম মো. মাহমুদুল্লাহ হাসান। তিনি নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার বাসিন্দা বলে জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি সূত্রে জানা যায়, আটককৃত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ভবনে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। পরীক্ষা চলাকালীন তিনি মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে উত্তর বের করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এরপর তাকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং প্রক্টর অফিসে নেওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী স্বীকার করেন যে, গত ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পঞ্চম শিফটের পরীক্ষাতেও তিনি একইভাবে জালিয়াতি করেছিলেন। সে পরীক্ষায় তিনি চ্যাটজিপিটির সহায়তায় উত্তর লিখেছিলেন। গত ২৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, তিনি মেধাতালিকায় ২৪২তম স্থান (রোল নম্বর: ৪১৩৩৬৪২) অর্জন করেন।
এরপর দুপুর দেড়টার দিকে প্রক্টর অফিসের সভাকক্ষে সাভার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল আমিনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। সেখানে মো. মাহমুদুল্লাহ হাসানকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তার ডি ও এ ইউনিটের পরীক্ষার উত্তরপত্র এবং রোল নম্বর বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় তার অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হতে পারে বলেও জানানো হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই ঘটনার বিচার করেছেন। ওই শিক্ষার্থীর ডি ও এ ইউনিটের উত্তরপত্র বাতিল করা হবে এবং তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
জালিয়াতির বিষয়ে জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত হয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ডি ইউনিটের ফলাফল বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এআরবি