‘অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রী কাউন্সিল’ আইন বাতিলের দাবি

মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ‘অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রী কাউন্সিল’ আইন ২০২৩ গঠন করা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই আইনে চূড়ান্ত করতে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় একটি সভা ডেকেছে। এটা জানার পর এ সেক্টরের স্টেকহোল্ডাররা আন্দোলনে নেমেছেন। রোববার (১৭ ডিসেম্বর) এ আইন বাতিল করার দাবি জানান। একই সঙ্গে সোমবারের ডাকা বৈঠকটি বাতিল করারও দাবি জানান বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন (বিভিএ)।

এই আইনকে পক্ষপাতদুষ্ট দাবি করে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে রোববার  (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরেএক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ড. নাহিদ রশিদের সভাপতিত্বে ডাকা সভা বাতিল করে এ সেক্টরের স্টেক হোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত নিয়ে আইন করার দাবি জানান। না হয় আন্দোলনের যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

‘বিভিএ’ সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সচিব যা ইচ্ছে তাই করছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতায় সরকারের খরচ বাড়ছে, প্রাণিসম্পদ খাতে বাড়ছে অস্থিরতা। বর্তমান সচিব ড. নাহিদ রশিদ নিজে একজন অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রী গ্রেজুয়েট হওয়ায় পরও পক্ষপাতদুষ্টভাবে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দিতে জনস্বার্থ বিরোধী এবং অপ্রয়োজনীয় এই কাউন্সিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল এক্টের আওতায় সারাদেশে প্রাণিসম্পদের অগ্রগতি ও উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তারা।

প্রতিবাদ সভায় এই আইনকে প্রাণিসম্পদকে বিভাজন করার উদ্যোগ আখ্যায়িত করে সেটি বন্ধে ১৮ ডিসেম্বর থেকে সারা বাংলাদেশের ভেটেরিনারিয়ানরা কঠোর কর্মসূচীতে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পাশাপাশি দেশের ১৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের ছাত্র-শিক্ষকরা কঠোর কর্মসুচীর মাধ্যমে এই অপ্রয়োজনীয় কাউন্সিল গঠনের কর্ম তৎপরতা বন্ধে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বক্তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, কৃষকরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং নির্বাচনকালীন সময় পাড়ি দিচ্ছে সেই মুহূর্তে সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কর্তৃক প্রাণিসম্পদকে বিশৃঙ্খল অবস্থায় ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। চক্রান্ত রুখতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ এবং অবিলম্বে এই কর্ম তৎপরতা বন্ধের জোর দাবি জানান-উপস্থিত বক্তারা।

বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন (বিভিএ) এর সভাপতি ডা. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব ড. হাবিবুর রহমান মোল্লার সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিসিএস লাইভষ্টক এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. নিতাই চন্দ্র, মহাসচিব ডা. জাহাঙ্গীর আলম, বঙ্গবন্ধু ভেটেরিনারি পরিষদের সহ-সভাপতি ডা. মো. আনিসুর রহমান, বঙ্গবন্ধু ভেটেরিনারি পরিষদের মহাসচিব ও দি ভেট এক্সিকিউটিভ এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সাইফুল বাসার, দি ভেট এক্সিকিউটিভ এর সভাপতি ডা. বিশ্বজিৎ রায়, সিনিয়র ভেটেরিনারিয়ান ডা. শফিউল আহাদ, ডা. সরোয়ার জাহান, ডা. নন্দ দুলাল টিকাদার, ডা. রেজাউল করিম, ডা. নাজমুল হুদা, ডা. মাহফুজ জনি, ডা. মারুফ আহমেদ, ডা. নুরুল ইসলাম শাওন, ডা. রাকিবুর রহমান, ডা. আবদুল্লাহ শুভ, ডা. আব্দুল মতিনসহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে, প্রাইভেট সেক্টরে কর্মরত ভেটেরিনারিয়ানবৃন্দ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের নেতারা।

এনএম/এমএসএ