শীতের সকালে বাইক স্টার্ট করা যেমন কঠিন, তেমনি রাস্তায় বের হলে রাইডারের জন্যও তৈরি হয় নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি। ঠান্ডা বাতাসে শরীর দ্রুত শক্তি হারায়, সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে এবং মনোযোগ কমে যেতে পারে। তাই শীতে বাইক রাইড করার আগে নিজের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

নিচে রাইডারদের জন্য কিছু দরকারি টিপস তুলে ধরা হলো-

১. জ্যাকেট: ঠান্ডা ও বাতাস থেকে সুরক্ষা

শীতে বাইক চালানোর সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গিয়ার হলো জ্যাকেট। উইন্ডপ্রুফ বা থার্মাল জ্যাকেট হলে ঠান্ডা বাতাস আটকানো যায়। আবার খুব ভারী জ্যাকেট পরলে চলাচলে অসুবিধা হয়, তাই হালকা কিন্তু গরম রাখে- এমন জ্যাকেট বেছে নেওয়া ভালো। হাত ও কাঁধে প্যাডিং থাকলে দুর্ঘটনাজনিত আঘাতও কমে।

২. হেলমেট: শুধু মাথার সুরক্ষা নয়, স্বাস্থ্যও রক্ষা করে

হেলমেট শুধু দুর্ঘটনার সময় মাথা বাঁচানোর জন্য নয়, শীতের সময় এটি কানে বাতাস লাগা রোধ ও রাইডারের মাথায় তাপ ধরে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ফুল-ফেস হেলমেট ব্যবহার করলে ঠান্ডা বাতাস সরাসরি মুখে লাগে না। ভেতরের প্যাডিং যত আরামদায়ক হবে, তত ভালোভাবে তাপ ধরে রাখা সম্ভব। এছাড়াও হেলমেট পরার আগে নিনজা মাস্ক পরলে আরও ভালো বাতাস আটকে রাখা ও তাপ ধরে রাখার কাজ করে। অ্যান্টি-ফগ ভাইজর থাকলে কুয়াশার সকালে দৃশ্যমানতা ভালো থাকে, যা নিরাপত্তা দেবে।

৩. গ্লাভস: হাত গরম রাখুন, নিয়ন্ত্রণও বাড়ুক

ঠান্ডায় হাত অসাড় হয়ে গেলে ব্রেক–ক্লাচ ধরা কঠিন হয়ে পড়ে। থার্মাল বা লেদার গ্লাভস হাত গরম রাখে এবং গ্রিপও ভালো দেয়। ভালোমানের গ্লাভস ঘাম শোষে, ফলে দীর্ঘসময় রাইডেও অস্বস্তি হয় না।

৪. শরীর গরম রাখার অভ্যাস

শীতে রাইডের আগে ও পরে শরীর গরম রাখা জরুরি। রাইডের আগে হালকা ওয়ার্ম-আপ করলে শরীর দ্রুত ঠান্ডা হয় না। খুব সকালে বা গভীর রাতে চট করেই বাইক নিয়ে না বেরিয়ে পড়াই ভালো। তবে পর্যাপ্ত পানি পান করতে ভুলবেন না; শীতে পানিশূন্যতা অহরহ ঘটে।

৫. রাস্তায় বাড়তি সতর্কতা

শীতে কুয়াশার কারণে রাস্তা পিচ্ছিল থাকে। ফলে টায়ার গরম হতে বেশি সময় লাগে। এমন অবস্থায় চট করেই গতি বাড়ানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এছাড়াও, বাঁকা বা ভেজা রাস্তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখুন, যেন অন্য চালকেরা সহজেই আপনার বাইক দেখতে পায়।

৬. শীতজনিত অসুখ থেকে সতর্ক থাকুন

জ্যাকেট, গ্লাভস কিংবা হেলমেট থাকলেও বাইক রাইডের পর সর্দি-কাশি লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই রাইড শেষে কয়েক মিনিট স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকুন। ঠান্ডা লাগলে তাৎক্ষণিকভাবে গরম পানি বা স্যুপ খান।

সবশেষ, বাইক চালানো আনন্দের হলেও স্বাস্থ্য-সুরক্ষা আগে। শীতে একটু বাড়তি প্রস্তুতি নিলে দীর্ঘ রাইডও আরামদায়ক হয়ে ওঠে। সঠিক গিয়ার, সঠিক অভ্যাস এবং সতর্কতা- এ কয়েকটি বিষয় রাইডারকে রাখবে নিরাপদ ও সুস্থ।

ডিএ