ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অছাত্রদের থাকার ঘটনা নতুন নয়। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলে মেয়াদোত্তীর্ণদের কারণে নিয়মিত শিক্ষার্থী হলে থাকতে না পারার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে হল প্রভোস্টকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের আবাসিক শিক্ষার্থী আসিফ হাওলাদার।

অভিযোগপত্রে তিনি লেখেন, আমি সূর্যসেন হলের ২৪৬ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র৷ চাকরির পড়াশোনার অজুহাতে ওই কক্ষে তিনজন অছাত্র কয়েক বছর ধরে অবস্থান করছেন৷ ওই বহিরাগত ব্যক্তিরা দিনের পর দিন কক্ষটিতে থাকেন, এমনকি রাতেও অবস্থান করেন। এমন পরিস্থিতিতে কক্ষে ঘুমাতে না পেরে আমি গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে আজ (রোববার) পর্যন্ত হলের বাইরে থাকতে বাধ্য হচ্ছি।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের রাহাতুর রহমান অপু, ২০১২-১৩ বর্ষের রাহাত আহমেদ খান এবং ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের নজরুল ইসলাম এ তিন অছাত্র নিজেরাই অবৈধভাবে হলে থাকেন এবং প্রায়ই অতিথি দাবি করে বহিরাগত ব্যক্তিদের কক্ষে নিয়ে আসেন।

অছাত্রদের বিতাড়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এই অছাত্রদের কারণে থাকার জায়গা নিয়ে আমি মানসিক পীড়নের মধ্যে আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে ওই অছাত্রদের ২৪৬ নম্বর কক্ষ থেকে বিতাড়িত করে আমাকে আমার বৈধ কক্ষে যথাযথভাবে থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে বাধিত করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসিফ হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিয়মিত শিক্ষার্থী হয়েও আমি হলের রুমে ভালোভাবে থাকতে পারছি না। মেয়াদোত্তীর্ণরা থাকছেন এবং পাশাপাশি বহিরাগতদেরও তারা রুমে নিয়ে আসেন নিয়মিত। এমন বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে সেখানে অবস্থান করা কঠিন। তাই আমি ১৫ দিনের বেশি সময় হলের বাইরে অবস্থান করছি। এর প্রতিকার চেয়ে আমি প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভুঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, লিখিত অভিযোগটি আমি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আজকেই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব। অছাত্রদের হলে থাকার কোনো সুযোগ নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছেলেদের প্রতিটি হলে বিপুল সংখ্যক অছাত্র অবস্থান করছেন। সূর্যসেন হল ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে এ ধরনের শিক্ষার্থীদের অবস্থান বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এসব শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

নিজেদের ‘রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাঁচাতে’ হলে থাকছেন সাবেক এসব শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে অনেকেই আবার ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রফেশনাল মাস্টার্স, এমফলি বা পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে, বাসা ভাড়ার খরচ বাঁচিয়ে নির্বিঘ্নে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ‘অরাজনৈতিক সাবেক শিক্ষার্থীরা’ হলে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এইচআর/এসকেডি