ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব আদরের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুর ঘটনায় মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা এই মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেন। তারা অতি দ্রুত তদন্তপূর্বক  জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিক অমি বলেন, মাহবুব রাজনৈতিক পরিবারের ছেলে। তার হত্যার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে। হত্যাকাণ্ড ঘটেছে প্রায় এক সপ্তাহ আগে। এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসেনি। মাহবুবের সাথে একজনকে স্পষ্ট দেখা গেলেও তাকে এখনও কেন ধরা যাচ্ছে না এটি একটি রহস্যজনক ঘটনা। এই বিষয়ে প্রশাসনের এমন নিশ্চুপ অবস্থান লজ্জাজনক।

মাহবুবের বন্ধু ইমরান হোসেন বলেন, কুষ্টিয়া যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত মাহবুব আমার সাথেই ছিল। পরের দিন সকালে তার মৃত্যুর খবর পাই। প্রথমে আমরা এটিকে একটি দুর্ঘটনা মনে করলেও শরীরের আঘাত এবং সার্বিক অবস্থা দেখে নিশ্চিত হই যে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

মাহবুবের আরেক বন্ধু রিয়াজ আহমেদ বলেন, মাহবুবের যাত্রাপথে একজন অপরিচিত ব্যক্তির সাথে ছবি তুলতে দেখা যায়।  মার সাথে রাত ১২টায় কথা হয় মাহবুবের। কিন্তু এরপর তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। সকালে আমরা দুর্ঘটনার খবর পাই। তার ফোন চেক করে দেখি যে ছবিটি সে ফেসবুকে ছেড়েছিল সেটি রাত ৩টায় পোস্ট করা হয়। অথচ ছবিটি তোলা হয়েছিল রাত ১টায়। রেলের সিসিটিভি চেক করে দেখা যায়, ট্রেনটি পাকশী ব্রিজ অতিক্রম করে রাত আড়াইটায়।

এ সময় মাহবুব হত্যার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতকরণে ৪ দফা লিখিত দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। দাবি গুলো হচ্ছে- তদন্তের দায়িত্বভার পিবিআই- এর হাতে তুলে দিতে হবে; ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে হবে; বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে খুনির  দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে; সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ১৭ তারিখ মাহবুব আদর ঢাকা চিত্রা ট্রেনে কুষ্টিয়া রওনা করে। যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে দাবি করেছেন তার পরিবার। মাহবুবের বাড়ি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায়। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। তার বাবা আব্দুল হান্নান মিঠু জয়পুরহাট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান।

এইচআর/এমএইচএস