ছাত্রী হেনস্তায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাত ৮টার দিকে বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে চবি ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল হাসান দিনার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সবাই এক পরিবারের মতো। সবার পরিচয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব। অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। অতিদ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে হবে, অন্যথায় ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

ছাত্রলীগ নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, দাবি একটাই, অপরাধীদের দ্রুত সময়ে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। আমরা আর কোনো কালক্ষেপণ দেখতে চাই না।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চবি ছাত্রলীগের সাবেক পাঠাগার সম্পাদক আবু বকর তোহা, সাইদুল ইসলাম সাঈদ, মইনুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান, রাজু মুন্সী, শাত্তন, সম্রাটসহ শতাধিক নেতাকর্মী। এছাড়াও সমাবেশে ভিডিও কলের মাধ্যেমে যুক্ত হন চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু।

এদিকে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনার বিচারের দাবি ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ সময় আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষকও অংশগ্রহণ করেন।

বেলা ১১টার দিকে ক্লাস বর্জন করে প্রথমে বিজ্ঞান অনুষদ ও পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একত্রিত হন।

এর আগে বুধবার (২০ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রীরা। এ সময় চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার শর্তে আন্দোলন থেকে সরে আসেন তারা। 

গত রোববার (১৭ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হল সংলগ্ন এলাকায় পাঁচজন দুর্বৃত্তের হাতে শারীরিক হেনস্তার শিকার হন এক ছাত্রী। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা তার বন্ধুকেও মারধর করা হয়। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন। পরে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যৌন নিপীড়নের এ ঘটনার জেরে ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হলে প্রবেশের ব্যাপারে সময়সীমা বেঁধে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। 

রুমান হাফিজ/আরএআর