হল ক্যাম্পাস বন্ধ রেখে অনলাইন বা অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া বৈষম্যমূলক। এতে অনেক দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। অনেকে ঝরে পড়বে। দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের প্রতি এ ধরনের বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। হল-ক্যাম্পাস খুলেই পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে। 

এমন দাবি নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৩ জুন) বেলা ১২টায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, হল না খুলে পরীক্ষার আয়োজন করলে অনেক শিক্ষার্থীকে মেস ভাড়া করতে হবে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পক্ষে তা ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। এমনিতেই সারাদেশে লকডাউন চলছে। গরিব শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের হাতেও টাকা নেই। শিক্ষার্থীদের টিউশনিও বন্ধ। এর মধ্যে মেস ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা তারা পাবে কোথায়? বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরীক্ষার তারিখ চাইলেই ঘোষণা করতে পারে। কিন্তু দরিদ্র শিক্ষার্থীরা সেখানে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। পরীক্ষা না দিতে পেরে তারা ঝরে পড়বে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের প্রতি এ ধরনের নিকৃষ্ট বৈষম্য কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।

ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহাত বলেন, করোনার অজুহাতে হল বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হলে মেসগুলোতে ছাত্ররা জমায়েত হবে। হলে করোনা হয়, কিন্তু মেসে করোনা হয় না, এটা কোন কথা?

তিনি আরও বলেন, শহর পর্যায়ে কোনো কোনো এলাকার ইন্টারনেট সুবিধা ভালো থাকলেও, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে তা ভালোভাবে পৌঁছায়নি। অনেক এলাকায় গাছের মগডালে উঠেও নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। এছাড়া ভিডিও ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট ডাটা ব্যয়বহুলও। একটি ব্যয়বহুল ও শহুরে ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া আর দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের ঘাড় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া একই কথা।

‘অবিলম্বে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই ডোজ টিকা দেওয়ার পরও অনেকের করোনা হচ্ছে। তাই টিকা দিলেই করোনা চলে যাবে, এমনটা নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সঙ্গে কোনো ধরনের শর্ত আরোপ করা যাবে না। বিনা শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। টিকা বা সংক্রমণের হারকে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়, তবে আজীবনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না। শিক্ষা সবার জন্য মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভূক্ত। কেউ শিক্ষা পাবে আর কেউ শিক্ষা পাবে না, সেটি হবে না।

আরএইচটি/জেডএস