রাবি ক্যাম্পাস- ফাইল ছবি

গবেষণা সংস্থা স্কপাসের তালিকায় প্রথমবারের মতো তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। সংস্থাটির তালিকাভুক্ত বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা বিবেচনায় এ অর্জন রাবির। সংস্থাটির সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্ত বলছে গত বছর (২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত) রাবির গবেষকগণ ৪৭০টির মতো গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।

সর্বোচ্চ ৭৬০টি প্রকাশনা নিয়ে তালিকায় শীর্ষে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। আর গত বছরের চেয়ে ১০০টি কম গবেষণাপত্র প্রকাশ করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। যেখানে আগের বছরের চেয়ে ১০০টি বেশি গবেষণা প্রকাশ করেছে ঢাবি।

এদিকে আগের বছরের ৩৩০টি প্রকাশনা থেকে ৪৬৫টিতে উন্নীত করেছেন রাবির গবেষকগণ। অর্থাৎ করোনা মহামারির মধ্যেও আগের চেয়ে ১৩৫টি বেশি গবেষণা প্রকাশ করতে পেরেছেন তারা। এতে র‍্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ এগিয়ে চতুর্থ থেকে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসে রাবি। 

স্কপাসের প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী,  রাবির গবেষকদের প্রকাশিত গবেষণাপত্রের মধ্যে ৭৪ শতাংশই আর্টিকেল। বাকিগুলো প্রকাশ হয়েছে কনফারেন্স পেপার, রিভিউ আর্টিকেল এবং বইয়ের অধ্যায় হিসেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির শীর্ষ গবেষকদের তালিকায় সর্বোচ্চ ২০টি গবেষণা নিয়ে শ্রেষ্ঠ গবেষকের স্বীকৃতি পেয়েছেন অধ্যাপক সালেহ হাসান নকিব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। 
তার চেয়ে তিনটি কম ১৭টি প্রকাশনা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম।  

অন্যদিকে ১২টি প্রকাশনা নিয়ে যৌথভাবে তৃতীয় অবস্থানে আছেন ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জাকের হোসেন ও অধ্যাপক অলোক কুমার পাল এবং ফিসারিজ বিভাগের অধ্যাপক এম ইয়ামিন হোসেন। তালিকার শীর্ষ ১৫ জন গবেষকের সবাই সাতটির বেশি করে আর্টিকেল প্রকাশ করেছেন।

গবেষণার বিষয় 

গবেষকদের প্রকাশিত প্রকাশনাগুলোর বিষয়বস্তুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১২.১ শতাংশ এসেছে প্রকৌশল বিষয়ক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ শতাংশের বিষয়বস্তু ছিল মেডিসিন। 

অন্যান্য প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে বায়োকেমিস্ট্রি, জেনেটিক্স এবং মলিকুলার বায়োলজি ৮.৯ শতাংশ,  ৮.১ শতাংশ ছিল কম্পিউটার বিজ্ঞান সম্পর্কিত। আর পদার্থবিজ্ঞান এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে প্রকাশনা ছিল ৭.৫ ভাগ। এর চেয়ে কম ৭.১ শতাংশ বিষয়বস্তু নিয়ে গবেষণা হয়েছে কৃষি, জীব বিজ্ঞান ও শক্তি নিয়ে। আর ৬ শতাংশ গবেষণাপত্র প্রকাশ করে ম্যাটেরিয়াল সাইন্স। মাত্র ৫ শতাংশ গবেষণাপত্র প্রকাশ করে সবার শেষে আছে রসায়ন। 

বেড়েছে গবেষণা 

সংস্থাটির ওয়েবসাইটের তথ্য-উপাত্ত পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত বছর একই সময়ের তুলনায় এ বছর প্রায় দুই হাজার বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে ২০১৯ সালে সে সংখ্যাটা ছিল ৬ হাজার ৩৬৩, সেখানে এ বছর সেটা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ১৪০ এ।

দেশে গবেষণা প্রাচুর্যের মাঝেও সেরা গবেষকগণের কেউই পুরোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নন। ঢাবি, রাবি, বুয়েটকে পেছনে ফেলে সেরা দশ গবেষকের স্থান দখল করেছেন আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা।

তবে সেরা দশ গবেষক থাকার পরও র‍্যাঙ্কিংয়ে আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্রের। ৪১৮ গবেষণাপত্র প্রকাশ করে তৃতীয় অবস্থান থেকে পঞ্চম স্থানে নেমেছে তারা। 

আরএআর