জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ বেদখল করে চলমান খনন কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও রাস্তা অবরোধ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তা অবরোধ করে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ধূপখোলা মাঠ রক্ষার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর পুলিশ এলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফন্টের জবি সংসদের সহ-সভাপতি সুমাইয়া সোমা বলেন, আমাদের হলগুলো সব হাজী সেলিমের মতো দখলদাররা দখল করে নিয়েছে। এমনিভাবে আমাদের খেলার মাঠও তারা দখল করে নিচ্ছে। জগন্নাথ ইতিহাসের যা কিছু আছে সবকিছু দখল করে নিচ্ছে মনে হয়। ডিএসসিসি যদি এই মাঠের দিকে হাত দেয় তাহলে আমরা সেই হাত গুড়িয়ে দেবো। প্রশাসন যদি এই দাবি না মানে, তাহলে হল আন্দোলনের মতো আরেকটা আন্দোলন হবে।

মাঠ আন্দোলনের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের এই আন্দোলনে কোনো কুচক্রী মহল হাত দিলে তা আমরা প্রতিহত করব। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল পুলিশের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়েছে, কিন্তু আগামীতে বন্ধ হবে না। আমরা কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাব এসব দখলদারদের বিরুদ্ধে। আগামী রোববারে ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ করে মাঠে যাব।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করবে তাদের নির্দিষ্ট জায়গায়। রাস্তা অবরোধ করে বেআইনিভাবে আন্দোলন করলে পুলিশের দায়িত্ব সে আন্দোলন তুলে দেওয়া। রাস্তায় আন্দোলন করে জনসাধারণের ভোগান্তি হলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। মাঠকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। তারা আমাদের এখনো কিছু জানায়নি।

জানা যায়, গত ২৬ অক্টোবর গভীর রাতে সিটি করপোরশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ খননের কাজ শুরু করে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সিটি করপোরেশনের মেয়র আশ্বাস দিলেও তাদের না জানিয়েই মাঠ খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে। কাজ থামাতে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার কথা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য নিজস্ব কোনো মাঠ না থাকায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি তিন ভাগ করে। এক ভাগ তৎকালীন সরকারি জগন্নাথ কলেজকে ব্যবহার করার জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দেন। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি খেলার মাঠ হিসেবে ধূপখোলা মাঠটিকে ব্যবহার করছে। এই মাঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এমটি/ওএফ