সাবেক অধ্যাপক শাহীন মাহবুবা কবীর ও প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, সদ্য প্রয়াত শাহীন মাহবুবা কবীরের স্মৃতিচারণ করেছেন তার সাবেক ছাত্র প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস। 

রোববার (১৪ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি এ স্মৃতিচারণ করেন।   

তিনি লিখেছেন, আমাদের প্রিয় শাহীন ম্যাডাম মারা গেলেন। তিনি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক প্রয়াত কবীর চৌধুরীর বড় মেয়ে। ম্যাডামের ক্লাসে পড়ানোর ধরন, ছাত্র-শিক্ষকের ইন্টারেকশন এবং বিষয়বস্তুর গভীরতা আমার কাছে অসাধারণ মনে হতো। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার পরেও আমার সঙ্গে ম্যাডামের যোগাযোগ ছিল। 

ইমরুল কায়েস লিখেছেন, একজন শিক্ষক যে কিভাবে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হতে পারে, ম্যাডাম ছিলেন আমার জীবনে তার প্রকৃত উদাহরণ। সমসাময়িক সাহিত্য, রাজনীতি, সামাজিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের আলাপ হতো। শাহীন ম্যাডাম গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগছিলেন। সিঙ্গাপুরে বসবাসরত তার ছেলের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

তিনি আরও লিখেছেন, আমার সঙ্গে নিয়মিতই কথা হতো। ম্যাডাম যে এত অদ্ভুত সুন্দর রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতেন- এটা জানা ছিল না। গান রেকর্ড করে প্রতিনিয়তই আমাকে পাঠাতেন। প্রথম দিকে চিকিৎসায় ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন জানতে পারলাম, চিকিৎসক বলে দিয়েছেন ওনার (শাহীন) সময় আর বেশি নেই। শেষ দিনগুলো দেশে কাটাতে তড়িঘড়ি করেই ফিরে এলেন। 

ইমরুল কায়েস লিখেছেন, দেশে ফেরার পর একদিন মাত্র আমার সঙ্গে শাহীন ম্যাডামের কথা হয়েছে। ওনার বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যেই আমার বিদেশ সফরের কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়। ভেবেছিলাম দেশে ফিরেই ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করব। জাহাঙ্গীরনগরে (বিশ্ববিদ্যালয়ে) যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আমাদের দুজনের একটি বিশেষ অনুবাদ করারও কথা ছিল। কোনো কিছুই আর হলো না, হবে না আর কোনোদিনও। তার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া কঠিন। বিদেশের মাটিতে বসেও প্রতি মুহূর্তে অনুভব করছি স্বজন হারানোর বেদনা। 

কায়েস আরও লিখেছেন, প্রিয় শিক্ষক অধ্যাপক শাহীন মাহবুবা কবীরের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।

এইউএ/আইএসএইচ/এইচকে