মশার উৎপাতে ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা নামতেই মশারিবন্দি হচ্ছেন

ঢাকা কলেজে মশার দাপট চরমে। দিন-রাত মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। দিনে ক্লাসে মন দিয়ে বসা যাচ্ছে না। রাতে বসা যাচ্ছে না হোস্টেলের পড়ার টেবিলে। ঝাঁক বেঁধে মশারা উড়ছে। সুযোগ পেলেই কামড়ে দিচ্ছে। বিপাকে পড়ে ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা নামতেই হচ্ছেন মশারিবন্দি। অনেকেই কয়েল জ্বালিয়ে বাঁচতে চাইছেন মশা থেকে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। 

রোববার (১৪ নভেম্বর) সরেজমিনে কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস, পশ্চিম ছাত্রাবাস, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাস, উত্তর ছাত্রাবাস, দক্ষিণ ছাত্রাবাস এবং দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাস ঘুরে দেখা যায়, ছাত্রাবাসের চারপাশেই স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। ময়লা পানি নিষ্কাশনের ড্রেনে নেই ঢাকনা। সবখানে মশার বিচরণ। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দিনের বেলা ছাত্রাবাসের কক্ষে মশার উপদ্রব কিছুটা কম থাকলেও বিকেল হলেই তা বাড়তে শুরু করে। আবাসিক ছাত্রাবাসের ঝোপঝাড়, স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা পরিষ্কার না করা, ময়লা-আবর্জনা ঠিকমতো অপসারণ না করা এবং দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণেই ছাত্রাবাসে মশার উপদ্রব বেড়েছে। 

ঢাকা কলেজে মশার বংশবৃদ্ধির অন্যতম স্থান নালার পানি

ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, দিন নেই রাত নেই মশার কামড়ে অস্থির। একমাত্র ভরসা কয়েল। এটি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে। আমরা চাই কলেজের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত মশা নিধনের কর্মসূচি নেওয়া হোক।

দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী বেলাল হোসাইন বলেন, বড় বড় মশা সমানতালে কামড়ে যাচ্ছে। এতে শান্তিতে ঘুমাতেও পারছি না, পড়াশোনাও করতে পারছি না। এভাবে আর কয়েকদিন চলতে থাকলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হব। সিটি করপোরেশনের লোকজন নিয়মিত ওষুধ দেয় না। কলেজ প্রশাসনের যথাযথ উদ্যোগ নেই। ভোগান্তি সব সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

মশার উপদ্রব কতটা ভয়াবহ হয়েছে তা কিছুটা অনুমান করা যায় ছাত্রাবাস সংলগ্ন দোকানিদের কথায়। একাধিক দোকানি জানান, প্রতিদিন বিকেলে কয়েল বিক্রি শুরু হয়। সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত ১৫-২০ প্যাকেট খোলা কয়েল ১০ টাকা পিস বিক্রি হয়। 

মশা থেকে বাঁচতে অনেকেই কয়েল জ্বালিয়ে পড়ালেখা করছেন 

মশার উপদ্রব কমাতে কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই. কে. সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, ঢাকা শহরে এমনিতেই মশার উপদ্রব বেশি। আমরা খুব সতর্ক। ড্রেনে কেরোসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তাছাড়া ছাত্রাবাস কলেজের খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান। রাতে সেখানে শিক্ষার্থীরা থাকে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বলা হয়েছে তারা যেন ক্যাম্পাসের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে। 

অধ্যক্ষ বলেন, সিটি করপোরেশনকে বারবার বলা হচ্ছে। তারাও দুই দিন পর পর আসে। তাদেরকে অনুরোধ করেছি যেন প্রতিদিন ওষুধ দেয়। 

কলেজের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মশার ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করা হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে কথা বলতে স্থানীয় ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আ স ম ফেরদৌস আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আরএইচটি/আইএসএইচ/এইচকে