নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের যত বড় বড় কাজ হয়েছে এবং হতে যাচ্ছে আল্লাহ সেগুলো আমাদের পরিবারের হাত দিয়ে করিয়েছেন। অনেকে নির্বাচিত হয়ে বলে আমি করে দিয়েছি। আপনি করে দেয়ার কে? আপনি কেউ না, আল্লাহর হুকুমে হয়। আমরা মাধ্যম মাত্র। 

তিনি বলেন, আমি শেখ হাসিনার জন্য দোয়া চাই। রাষ্ট্র ধ্বংসের পরিকল্পনা চলছে। শেখ হাসিনাকে দরকার। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি। শেখ হাসিনার কিছু হলে এই বাংলাদেশের মাথা তুলে দাঁড়াতে ১শ বছর লাগবে। 

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় মরহুম আলহাজ সাইফুদ্দিন আহমেদ স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন। মরহুম আলহাজ সাইফুদ্দিন আহমেদ তার শ্বশুর। 

শামীম ওসমান তার শ্বশুরের সৃতিচারণ করে বলেন, আমি ৩৫ বছর ধরে দেখেছি। তার বাড়ি কিন্তু বিশাল। কিন্তু তার রুমটা মাত্র ৫ ফুট বাই ৪ ফুট হবে। আমি সে বাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই দেখতাম তার ঘরে একটা চৌকি, একটা তোষক আর একট ফ্যান। সেই ফ্যানটাও ভাঙা। তার ঘরে কোনো এসি ছিল না। এটাই তার সম্পদ। তিনি লন্ডনে লেখাপড়া করেছিলেন, তাও পরে ফিরে এসেছিলেন। মানুষের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এটাই হয়ত তার আত্মতৃপ্তি ছিল। মৃত্যুর আগে তার একটাই ইচ্ছা ছিল, তার মৃত্যুটা যেন বাংলাদেশে হয় এবং বন্দরে তার মায়ের পাশে যেন তার কবর দেওয়া হয়।

আমি মৃত মানুষের মুখ দেখতে পারি না। বিশেষ করে আব্বা আম্মা ভাইয়া মারা যাওয়ার পর আমি হাসপাতালেও যাই না। অনেকে মাইন্ড করে। যখন আমি শুনি কেউ অসুস্থ তখন আমার মনে হয় আমি হাসপাতালে গেলে হয়ত লোকটা বাঁচবে না। আমি তাকে এয়ারপোর্ট থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসলাম। আমি তাকে বললাম, আব্বা আপনি কোথায় জানেন। তিনি বললেন কোথায়? আমি বললাম আপনি বাংলাদেশে, ঢাকায়। তিনি বললেন আলহামদুলিল্লাহ। এটাই তার সঙ্গে আমার শেষ কথা।

 শামীম ওসমান বলেন, আমি আসার সময়ও কবরস্থান হয়ে আসলাম। আব্বা আম্মা ভাইয়ার কবরটা জিয়রত করে আসলাম। সকালে উঠে আজকে পত্রিকা পড়ছিলম। আমি রাতেই ৩০/৩৫টা পত্রিকা পড়ি, রাতে একটা দুইটা কখনও কখনও আড়াইটা পর্যন্ত। তারপর নামাজ পড়ি। সেখানে দেখলাম প্রতিটা পত্রিকার হেডলাইন যুদ্ধ। আমি ছবি দেখলাম, লাশ পড়ে আছে ট্যাংকের সামনে। ভাবলাম কী লাভ, মানুষকে মারার জন্য মানুষ এত অস্ত্র তৈরি করে কেন। মানুষকে বাঁচানোর জন্য করে না কেন। আমার মনটা সকাল থেকেই খারাপ। মন খারাপ লাগলেই আব্বা আম্মা ভাইয়ার কবরে যাই এবং জিয়ারত করি। 

রাজু আহমেদ/আরএআর