১০ বছর পর চাঞ্চল্যকর খুলনার জাকির মহুরি হত্যা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরে পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে নগরীর বয়রা এলাকা থেকে এই মামলার অর্থের যোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারী বাহাউদ্দিন খন্দকারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। বাহাউদ্দিন ওই এলাকার আব্দুল ছাত্তার খন্দকারের ছেলে।

পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাকির মুহুরির সহকারী হিসেবে কাজ করত বাহাউদ্দিন। তাছাড়া ভিকটিমের তৃতীয় স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল তার। এটা জানতে পেরে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। এক পর্যায়ে বাহাউদ্দিন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন। এক সময় সুযোগও এসে যায়। ভাড়াটে খুনী ঠিক করেন বাহাউদ্দিন। ওই দিন সন্ধ্যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার চেম্বারের সামনে যায়। অ‌ফিস বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতির সময় সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে। বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। মারাত্মক জখম অবস্থায় মার্কেটের অন্য সদস্যরা তাকে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। পরবর্তীতে অবস্থা খারাপ হলে তাকে যশোর সিএমএইচ-এ প্রেরণ করা হয়। তবে পথিমধ্যে তিনি মারা যান। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে খুলনা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই মুখপাত্র আরও বলেন, ঘটনার দুই দিন আগে বাহাউদ্দিন নেপালে চলে যান। পাঁচ দিন পর তিনি দেশে ফেরেন। ফিরে তিনি উচ্চ আদালত থেকে গ্রেপ্তারসহ হয়রানি না করার জন্য মিস পিটিশন মামলা ক‌রেন। যার নং ৭০৫৯/১২। মামলা দায়ের করে সময় বর্ধিত করে আসছিল সে।  মিসপিটিশনটির দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০২১ সালে নিস্পত্তি করা হয়। নিস্পত্তি আদেশ পাওয়ায় সোমবার রাতে বয়রা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলাটি পিবিআই এর আগে সদর থানা পুলিশ, পরে ডিবি, এরপর সিআইডি গ্রহণ করে। সাত বছর তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। পরবর্তীতে বাদীর নারাজি পিটিশনে মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। বাহাউদ্দিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের নিকট গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আছে এমন আরও এক ব্যক্তির নাম বলেছে। তাকে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে পি‌বিআই। ২০১৯ সালে মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইয়ের এসআই পলাশ চন্দ্র রায়। তিনি বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন। তারপর এর ক্লু বের করতে সক্ষম হন।

মোহাম্মদ মিলন/আরআই