তুহিন দর্জি

মাদারীপুর জেলা শাখার সহসভাপতি তুহিন দর্জীকে ছাগল চুরির মামলায় জড়িত থাকায় পদ থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়।

মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান অনিক বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তুহিন দর্জি জেলা ইমারত শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ঘটমাঝি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির দর্জির ছেলে।

উল্লেখ্য, ৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের পখিরা এলাকা থেকে প্রাইভেটকারে করে স্থানীয় লোকমানের একটি ছাগল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তুহিন দর্জি ও তার সহযোগীরা। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে ধাওয়া দিলে তারা সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন।

পরে খবর দেওয়া হলে পুলিশ চুরি হওয়া ছাগল বহন করা প্রাইভেটকারটির গতিরোধ করে। পরে ছাত্রলীগ নেতা তুহিন দর্জি এবং তার চার সহযোগী জুবায়ের হাওলাদার, রানা ব্যাপারী, রবিউল ইসলাম ও মাহবুব তালুকদারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় চুরির কাজে ব্যবহৃত ওই প্রাইভেটকার জব্দ ও ছাগল উদ্ধার করা হয়।

মামলা হওয়ার এক দিন পর ছাত্রলীগ নেতা তুহিন ও তার চার সহযোগীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপংকর রোয়াজা সাংবাদিকদের জানান, ‘মঙ্গলবার এই ছাগল চুরির মামলার শুনানি ছিল। আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আমরা পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করি। কারণ, মামলার বাদী এজাহারে আরও ৫টি গৃহপালিত ছাগল একই কায়দায় চুরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।’

তিনি আরও জানান, ‘এই ছাগল চোর চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছেন কি না, সেই বিষয় তদন্ত করতেই আমরা পাঁচদিন করে রিমান্ড চাই। কিন্তু আদালতে আসামির পক্ষের লোকজন মামলার বাদীকে হাজির করেন। সেখানে বাদী আসামির জামিন দেওয়া হলে তার আপত্তি নেই বলে আদালতকে জানান। এ কারণে আদালত রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিদের জেলহাজতে বসেই জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।’

এসআই দিপংকর রোয়াজা বলেন, ছাত্রলীগ নেতা তুহিন দর্জির নামে সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৭টি মামলা আছে। বর্তমানে আসামি তুহিন ও তার সহযোগীরা কারাগারে আছেন।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, ‘ছাগল চুরির ঘটনাটি সারা দেশে সমালোচিত হয়েছে। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তুহিন দর্জি গ্রেপ্তার হওয়ার দিনই আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে তার বহিষ্কার চেয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছি। চিঠি
পাঠানোর ৬ দিন পর মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত ছাত্রলীগের একটি প্যাডে তুহিনকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।’

নাজমুল মোড়ল/এমএসআর