ডামুড্যায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌর নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পরিবেশ না থাকার কারণে দুই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা। সাতটি কেন্দ্রের ফলাফলে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রেজাউল করিম রাজা ছৈয়াল এগিয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন।

কেন্দ্র দুইটি হলো-ঠেংগার বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুলকুড়ি মজিদ মাদবরের বাড়ি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ২ নম্বর ওয়ার্ড ঠেংগার বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই সাধারণ কাউন্সিলের সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় ছয়জন আহত হয়।

দুপুর আড়াইটার দিকে পৌরসভার ৫ নম্বর ওর্য়ার্ডের কুলকুড়ি মজিদ মাদবরের বাড়ি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্র দখলে নেয় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। এতে সাধারণ ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে ছুটতে থাকে। এ সময় রাজা ছৈয়ালের সমর্থকরা বাধা দেন। পরে কেন্দ্র দখল করে ব্যালট ছিনতাই করে নিয়ে যান আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি, র্যাব কেন্দ্র আসেন। কারচুপির অভিযোগ এনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী (মোবাইল) আলমগীর হোসেন ভোট বর্জন করেন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৯ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১২ হাজার ২৫৯ জন ভোটার এবারের ভোট প্রয়োগ করেন। জগ মার্কায় রেজাউল করিম ৭ কেন্দ্রে ৩৯৭৫টি ভোট পায়। অন্যদিকে নৌকার কামাল উদ্দিন আহমেদ ৭ কেন্দ্রে ২৩২৬টি ভোট পান।

ঠেংগার বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ফয়জুল করিম বলেন, দুই সাধারণ কাউন্সিল লোকমান হোসেন (উটপাখি) ও শাহ আলী গোলদার বাদল (পাঞ্জাবি) প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

জেলা নির্বাচন আফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, দুই একটি কেন্দ্র ছাড়া সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে। দুইটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার কারণে প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ভোটগ্রহণ স্থগিত করে। এ দুই কেন্দ্রের ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে দেশের ২৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ৬১ পৌরসভায় ও তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় নির্বাচন হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপে দেশের ৩১টি পৌরসভায় নির্বাচন হবে। 

তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৬৯ জন, বিএনপির ৯ জন ও স্বতন্ত্র ২৫ জন প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচনে মেয়র পদে তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৬ জন, বিএনপির তিনজন ও স্বতন্ত্র ১৪ জন বিজয়ী হন।

দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৫ জন, বিএনপির চারজন, জাতীয় পার্টির একজন, জাসদের একজন ও আটজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।

প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে ১৮ জন, বিএনপির ধানের শীষের দুইজন এবং তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।

মেহেদী হাসান/এসপি