মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার রিকাবী বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের সরব উপস্থিতি / ছবি- ঢাকা পোস্ট

চতুর্থ ধাপের ৫৫টি পৌরসভা নির্বাচনেও বেশিরভাগ মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয় লাভ করেছেন। রোববার  (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকেটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এদিন ২৯টি পৌরসভায় ইভিএমে এবং ২৬টি পৌরসভায় ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ করা হয়।

চতুর্থ ধাপের এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত দুজন নারী মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন। তারা হলেন- ঠাকুরগাঁওয়ে আঞ্জুমান আরা বন্যা ও  জয়পুরহাটের কালাইয়ে রাবেয়া সুলতানা। এছাড়াও চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. জোবায়ের। নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভায় দুটি কেন্দ্র ও নরসিংদী পৌরসভায় চারটি কেন্দ্রের  ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। 

৪৮টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। একটি পৌরসভায় বিএনপি ও চারটি পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। 

ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর অনুযায়ী নৌকা প্রতীকে বিজয়ীরা হলেন- চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভায় মাহবুবুল আলম খোকা, পটিয়ায় আইয়ুব বাবুল, সাতকানিয়ায় মো. জোবায়ের (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় শামসুল হক, বান্দরবান পৌরসভায় মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, রাঙ্গামাটি পৌরসভায় আকবর হোসেন চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় তাকজিল খলিফা কাজল, কুমিল্লার হোমনায় অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, দাউদকান্দিতে নাঈম ইউসুফ শেখ, চাঁদপুরের কচুয়ায় নাজমুল আলম স্বপন, ফরিদগঞ্জে আবুল খায়ের পাটোয়ারী, নোয়াখালীর চাটখিলে মো. নিজামউদ্দিন বিপুল, সোনাইমুড়ীতে নুরুল হক চৌধুরী ও লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে এম মেজবাহউদ্দিন মিজু। 

ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌরসভায় শশধর সেন, নেত্রকোনা পৌরসভায় নজরুল ইসলাম খান, জামালপুরের মেলান্দহে শফিক জায়েদী রবিন, শেরপুর পৌরসভায় গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শ্রীবরদিতে মোহাম্মদ আলী লাল, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে আনোয়ার হোসেন, করিমগঞ্জে হাজী মোসলেম উদ্দিন ও হোসেনপুরে আব্দুল কাইয়ুম খোকন। 

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে রকিবুল হক ছানা, কালিহাতীতে নুরুন্নবী সরকার, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নজরুল ইসলাম মণ্ডল, নরসিংদীর মাধবদীতে মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক ও মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমে আব্দুস সালাম।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভায় আবুল কালাম আজাদ, তানোরে ইমরুল হক, পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভায় হাফিজুর রহমান হাফিজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সৈয়দ মনিরুল ইসলাম, নাটোরের বড়াইগ্রামে মাজেদুল বারী নয়ন, ঠাকুরগাঁওয়ে আঞ্জুমান আরা বেগম, রানীশৈংকলে মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাটের পাটগ্রামে রাশেদুল ইসলাম সুইট ও জয়পুরহাটের কালাইয়ে রাবেয়া সুলতানা।  

বরিশালের বানারীপাড়ায় সুভাষ চন্দ্র শীল, মুলাদীতে শফি উজ জামান রুবেল, পটুয়াখালীর কলাপড়ায় বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে রফিকুল ইসলাম, আলমডাঙ্গায় হাসান কাদির গনু, যশোরের চৌগাছায় নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল, বাঘারপাড়ায় কামরুজ্জামান বাচ্চু, বাগেরহাট পৌরসভায় খান হাবিবুর রহমান, ফরিদপুরের নগরকান্দায় নিমাই চন্দ্র সরকার, সিলেটের কানাইঘাটে লুৎফুর রহমান ও হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সাইফুল আলম রুবেল নৌকা প্রতীকে জয় পেয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লালমনিরহাট পৌরসভায় রেজাউল করিম স্বপন, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মনিরুল ইসলাম বাবু, রাজবাড়ী সদরে আলমগীর শেখ এবং ময়মনসিংহের ত্রিশালে আনিছুজ্জামান আনিছ জয় পেয়েছেন।

এ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত একমাত্র প্রার্থী হিসেবে  সাতক্ষীরা পৌরসভায় তাজকিন আহমেদ চিশতী জয় পেয়েছেন। 

ভোট চলাকালে বেশ কিছু পৌরসভায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ কারণে কয়েকটি পৌরসভায় দুপুরের মধ্যেই স্বতন্ত্র ও বিএনপির প্রার্থীরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। 

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে দেশের ২৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ৬১ পৌরসভায় ও তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় নির্বাচন হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপে দেশের ৩১টি পৌরসভায় নির্বাচন হবে।

তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৬৯ জন, বিএনপির ৯ জন ও স্বতন্ত্র ২৫ জন প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচনে মেয়র পদে তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৬ জন, বিএনপির তিন ও স্বতন্ত্র ১৪ জন বিজয়ী হন।

দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৫ জন, বিএনপির চারজন, জাতীয় পার্টির একজন, জাসদের একজন ও আটজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।

প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে ১৮ জন, বিএনপির ধানের শীষের দুইজন এবং তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।

আরএআর