শরীয়তপুরে মাকে হত্যার দায়ে বাবার ফাঁসি চেয়ে ছেলের মানববন্ধন

‘আমার মাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বাবা। অনেক দিন ধরে বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে আসছে। কষ্ট দেওয়ার পরও শান্ত হননি। কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাকে। আমি আমার বাবার ফাঁসি চাই।’ কথাগুলো বলেন আমেনা বেগমের একমাত্র ছেলে নয়ন। কথাগুলো বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে সে।

বুধবার (১৭ ফ্রেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদর উপজেলার বুড়িরহাট এলাকায় খুলনা-চাঁদপুর সড়কের পাশে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কথাগুলো বলে সে। মানববন্ধনে এলাকার হাজার হাজার নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করে। 

আমেনা বেগমের বড় ভাই আমীন মাদবর বলেন, আমার বোন একটা ভালো মেয়ে ছিল। বিদেশ থাকতেই নজরুল আমার বোনকে সন্দেহের চোখে দেখত। মাঝে মধ্যেই ফোনে ঝগড়া করত। আমরা মানায়া দিতাম। করোনার আগে নজরুল মালয়েশিয়া থেকে আসে। আসার পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের নেশার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। গত ৬ মাস ধরে আমেনা আমাদের বাড়িতে থাকে। ওর কাছে আসে না। এক মাস আগে আমরা বুজিয়ে পাঠিয়েছি। তার ঠিক এক মাস পর আমার বোনটাকে হত্যা করে নজরুল। তা আবার ফেসবুকে দিয়েছে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, নজরুল একটা নরপশু। মানুষ মানুষকে এভাবে হত্যা করতে পারে তা বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার ওর ফাঁসি চাই। 

জানা যায়, ১৫ বছর আগে ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গঙ্গাসকাঠি গ্রামের মৃত আজিজ মাদবরের মেয়ে আমেনা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় নজরুল ইসলাম মাদবরের। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় থাকতেন। এক বছর আগে দেশে আসেন নজরুল। দেশে আসার পর থেকেই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। মাঝে মধ্যেই দুইজনের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। দুই পরিবারের মাধ্যমে মীমাংসা হয়। এর মধ্যে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নজরুল নিজের স্ত্রী আমেনা বেগমকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তা ফেসবুক লাইভে এসে দেখান। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।

ডামুড্যা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর বলেন, ডামুড্যার ইসলামপুরে আমেনা নামে এক গৃহবধূকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে তার স্বামী। আমেনার বড় ভাই বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় একটি মামলা করে। এতে স্বামীসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

মেহেদী হাসান/এসপি