সাভার ও নড়াইলে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে রংপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে শিক্ষককে জুতার মালা পরানোর মতো ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় উপস্থিত পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা সদস্যদেরও বিচার দাবি করেন তারা।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে বাকবিশিস এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। দেশব্যাপী শিক্ষক লাঞ্ছনা ও হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ সংগঠনটি।  

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষদের প্রতি এমন নজিরবিহীন বর্বরোচিত ও পাশবিক নির্যাতন শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পিটুনিতে শিক্ষকের মৃত্যু কোনোভাবেই শুভ লক্ষণ নয়। পুলিশের উপস্থিতি শিক্ষককে নির্যাতন, লাঞ্ছিত ও জুতা পরানোর মতো ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়। শিক্ষকদের ওপর হামলা, মামলা, নির্যাতনসহ শিক্ষকবিরোধি অপপ্রচার বাংলাদেশকে এক গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশের সমগ্র শিক্ষক সমাজ আজ বিক্ষুদ্ধ ও আতঙ্কিত।

বিগত দিনের অসংখ্য বিচারবিহীন সংস্কৃতি ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর উদাসিনতার কারণে দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে দাবি করে শিক্ষক নেতারা বলেন, এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক সমাজের জীবনমালের নিশ্চয়তা বিধানে সরকারের হস্তক্ষেপই এখন ভরসা। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সমাবেশে অধ্যক্ষ শাহ মো. রেজাউল ইসলামের সঞ্চালনায় ও রংপুর জেলা বাকবিশিসের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ মিঞার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাকবিশিস মহানগর সভাপতি নবীব হোসেন লাভলু, অধ্যক্ষ শরিফুজ্জামান বুলু, অধ্যক্ষ জাহানারা বেগম, অধ্যক্ষ মমিনুল হক, সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির বিভাগীয় সম্পাদক শফিয়ার রহমান, অধ্যক্ষ বাকী সরকার, অধ্যাপক আব্দুল বাতেন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে সাভারের আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করেন জিতু। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২৭ জুন) মারা যান তিনি।

অন্যদিকে নড়াইল মীর্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। শুধু তাই নয়, পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে অপমানিত করা হয়। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই