নড়াইলের লোহাগড়ায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে আটক আকাশ সাহার (২৪) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (১৭ জুলাই) নড়াইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মো. মোরশেদুল আলম রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এস আই) মাকফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আদালতে আসামি আকাশ সাহার সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত তিনদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করছেন।
 
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে আকাশ সাহার বিরুদ্ধে। বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ওই দিন সন্ধ্যার পর স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে দাঙ্গা সংঘটনের অভিযোগ এনে সালাহ উদ্দিন কচি বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় আকাশ সাহাকে অভিযুক্ত করে শনিবার (১৬ জুলাই) রাতে মামলা দায়ের করেন। রাত সাড়ে ১১টায় অভিযুক্ত আকাশ সাহাকে খুলনার ডুমুরিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অভিযুক্ত আকাশ সাহা নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী অশোক সাহার ছেলে। 

এদিকে, শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ও মন্দির পরিদর্শন করেছেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।

সময় তিনি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। একইসঙ্গে তালিকা করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও পরিবারের সঠিক সংখ্যা জানাতে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতে ও ক্ষতিপূরণ প্রদানে ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতি আশ্বাস প্রদান করেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রশাসন সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ, ডিবি, র‌্যাব, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করেছেন। পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সব ইউনিট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন। ভুক্তভোগীদের ক্ষতি যা হয়েছে তা সমাধান করা গেলেই সমাধান হবে না, এই পরিস্থিতিতে তাদের মানসিক ক্ষতিটা কাটিয়ে উঠতে একটু সময় লাগবে। মানসিকভাবে ভীতি কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা তাদের আশ্বস্ত করছি ও চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত তারা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেন।

এমএএস