ম্যারাথন দৌড়ে প্রথম হওয়া অমিত হাসানের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিচ্ছেন অতিথিরা

‘ম্যারাথন দৌড়ে অংশগ্রহণ করব বলে চা বিক্রি করার পাশাপাশি অনুশীলন করেছি। মনের মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল আমি পারব। তবে কীভাবে এই দৌড়ে অংশগ্রহণ করব, তা জানা ছিল না। পরে স্থানীয় দেওয়ান আব্দুল মতিন নামের এক ভাইয়ের সহযোগিতায় দৌড়ে অংশ নেই। আমার আত্মবিশ্বাস আর প্রচেষ্টায় ম্যারাথন দৌড়ে প্রথম হয়েছি। আমি অনেক খুশি।’ কথাগুলো বলছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকা ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে প্রথম হওয়া অমিত হাসান (১৯)।

জাতির জনকের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে মানিকগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকা ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন বয়সের ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। 

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে শহীদ-মিরাজ তপন স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশনের ব্যবস্থাপনা ও মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন সহযোগিতায় এ ম্যারাথন দৌড় অনুষ্ঠিত হয়। ম্যারাথনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ-দৌলা।

ম্যারাথন দৌড়ে প্রথম হওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে ঢাকা পোস্টকে কলেজছাত্র অমিত হাসান বলেন, আমি এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে হিমো পরিবহনের ২২ কিলোমিটার ও হিস্ট্রি অব ’৭১ এর ২৫ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ে অংশগ্রহণ করে প্রথম হয়েছি। এ ছাড়া গাজীপুর ও এলাকার আয়োজিত ম্যারাথন দৌড়েও অংশ নিয়েছি। তবে এই প্রথম সরকারিভাবে আয়োজিত ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে প্রথম হয়েছি।

৫ কিলোমিটার সড়ক প্রদক্ষিণ করেন অংশগ্রহণকারীরা

তিনি ঢাকা পোস্টকে আরও বলেন, করোনার কারণে কলেজ বন্ধ থাকায় বাড়িতে বসে না থেকে বাবা আবু বকর সিদ্দিকির চায়ের দোকানে চা বিক্রি করি। ছয় সদস্যের পরিবারে বড় সন্তান অমিত হাসান। বাবা আগে কৃষি কাজ করে সংসার চালাতো। তবে বছর তিনেক ধরে সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চায়ের দোকান করেন। সেখান থেকে যে আয় হয় তা দিয়েই চলে আমার পরিবারের খরচ।

তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.৮০ পেয়ে এসএসসি পাস করি। পরে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার জন্য সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই।

দৌড়ে অংশগ্রহণকারীরা শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে শহরের অভ্যন্তরীণ ৫ কিলোমিটার সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। ম্যারাথন শেষে অমিত হাসান প্রথম, পুলিশ সদস্য গোলাম রসূল দ্বিতীয় ও মামুন নামের একজন তৃতীয় হন। পরে ম্যারাথন দৌড়ে বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ-দৌলা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন লে. কর্নেল মো. ওয়াদুদউল্লাহ চৌধুরী পিএসসি, জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) ফৌজিয়া খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দিন, পৌর মেয়র রমজান আলী, ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুদেব সাহা, প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু প্রমুখ।

সোহেল হোসেন/এমএসআর