যশোরের চৌগাছায় রোগের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মাহফুজুল হক (৭৫) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী ফাঁস দিয়েছেন। শনিবার (১৩ আগস্ট) ভোরে নিজ বাড়ির ছাদের ওপর হেলে পড়া মেহগনি গাছের ডাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে তিনি একটি চিরকুটে ফাঁস নেওয়ার কারণ লিখে গেছেন।

মাহফুজুল হক উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের টেঙ্গুরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি চৌগাছা বাজারে কাপড়ের ব্যবসার পাশাপাশি টেঙ্গুরপুর গ্রামে মসজিদে দীর্ঘ দিন ধরে মুয়াজ্জিন ও সহকারী পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

চিরকুটে মাহফুজুল হক লেখেন- ‘খোকা বাপ আমি আর কাটাতি পারলাম না। কী করব এত জ্বালা আর সইতে পারলাম না। ঘাড়ে জ্বালা, মাথায় জ্বালা, পেটে জ্বালা, আর কত সইব। তোমরা সবাই দ্বীনের পথে থাকবা। কত ওষুধ খালাম রোগ ভালো হলো না, আমার জন্য সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করবা, আল্লাহ যেন আমায় মাফ করে দেন। আর যদি পুলিশ বাবাজিরা আসে, বাবাজিদের কাছে আমার অনুরোধ, শরীরের ও পেটের যন্ত্রণা সইতে না পেরে আমি চলে গেলাম। ভাই-বোন সবাই আল্লাহর পথে থাকিস।’

নিহতের বড় ছেলে শাহিনুর রহমান বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে বাবা শিরা রোগ, পেটের ব্যথা ও বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তার দেখানোর পরও কিছুতেই তিনি সুস্থ হচ্ছিলেন না। শুক্রবার দিবাগত রাতে ঘুমানোর পর ঘুম ভেঙে মা বাবাকে পাশে না পেয়ে আমাদের ডাকাডাকি করেন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বাবাকে ছাদের ওপর হেলে থাকা মেহগনি গাছের সঙ্গে ফাঁস নেওয়া অবস্থায় দেখতে পাই। এ সময় তাকে গাছ থেকে নামিয়ে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, মাহফুজুল হকের আত্মহত্যার ঘটনায় চৌগাছা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরিবারের কোনাে অভিযোগ না থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এসপি