সন্তানের মারধরে আহত মা

বড় ছেলের স্ত্রীর সঙ্গে ছোট দুই ছেলের সমাজ নিষিদ্ধ সর্ম্পকের প্রতিবাদ করায় দুই ছেলে ও পুত্রবধূ মিলে মা-বাবাকে ১০০ বার জুতাপিটা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। 

গতকাল শনিবার (১২ নভেম্বর) বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কালবিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। মা-বাবাকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযগি মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

হারতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অমল মল্লিক বলেন, দুই ছেলের মারধরের ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী শনিবার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। তখন দুই ছেলেকে নোটিশ করা হয়। তাদের ওই দিন দুই ছেলেকে ডেকে শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়। কিন্তু অভিযোগ দেওয়ায় দুই ছেলে মাকে পিটিয়েছে। খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর লোকজনের মাধ্যমে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার কৃষ্ণ কান্ত বাড়ৈ বলেন, প্রায়ই ভাইয়েরা মিলে মা-বাবাকে মারধর করে। এর আগেও মারধর করেছে। আমি এবং চেয়ারম্যান ওদের মিলিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছি। তবে সর্বশেষ শনিবার মারধরের ভিডিও দেখে আমি স্থির থাকতে পারিনি। এভাবে মাকে জুতাপেটা করা কেউ সহ্য করবে না। অথচ এই মা সন্তানদের বড় করার জন্য মাঠে ধান লাগিয়েছে। পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ধান চাষ করেছে। সেই মাকে মারধর করা হয়েছে। 

সন্তানের পিটুনিতে আহত মা স্বরস্বতী মণ্ডল (৬০) উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। স্বরস্বতী মন্ডল ওই গ্রামের বিষেশ্বর মণ্ডলের স্ত্রী। হামলাকারীরা হলো দুই ছেলে অমল মণ্ডল, শ্যামল মণ্ডল এবং অমল মণ্ডলের স্ত্রী মুক্তা মণ্ডল। এর আগের মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দেওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় পুনরায় বেধরক পিটিয়েছে তারা। 

আহত মা স্বরস্বতী মণ্ডল বলেন, বড় ছেলে অমল মণ্ডলের স্ত্রীর সঙ্গে ছেলে বিমল ও শ্যামল মণ্ডলের অবৈধ মেলামেশা আছে। এ নিয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়। তাতে মারধর করে আমাদের। মারধরের বিচার চেয়ে চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিলে শনিবার সন্ধ্যায় আমাকে (মা) টেনে বাড়ি থেকে বেড় করে দিয়ে ১০০ জুতাপিটা করে। 

উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক হামিন সুলতানা বলেন, আহত নারী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। হাসপাতালে এসেছেন আশ্রয়ের জন্য। এখানে তিনি নিজেকে নিরাপদ মনে করছেন। 

উজিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস