সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট: ভাড়া বেড়ে গেছে ৪০ টাকা
যান চলাচল বন্ধ
সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলছে। ধর্মঘটের কারণে বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে সিলেট থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। পাশাপাশি দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার সকালে সিলেট নগরের আম্বরখানা, চৌহাট্টা, বন্দরবাজার, উপশহর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে শুধু রিকশা, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। বন্ধ রয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা ও বাস চলাচল। বন্দরবাজার এলাকায় ধর্মঘটের সমর্থনে শ্রমিকদের অবস্থান নিতে দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
এদিকে ধর্মঘটের অজুহাতে নগরে রিকশা চালকেরা যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
নগরের বন্দরবাজার এলাকায় কথা হয় ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, টিলাগড়ে এমসি কলেজের পাশে আমার দোকান আছে। বন্দরবাজার থেকে টিলাগড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ১০ টাকা ভাড়া নিত। কিন্তু রিকশা চালক ৬০ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন। অথচ ধর্মঘটের আগে রিকশা চালকরা বন্দরবাজার থেকে টিলাগড় ২০-৩০ টাকা নিতেন।
বিজ্ঞাপন
একই অভিযোগ করেন নগরের মুন্সিপাড়া এলাকার ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, বন্দরবাজার থেকে মুন্সিপাড়ার রিকশা ভাড়া ৩০ টাকা। আজ ৫০ টাকা দিয়েও রিকশা পাচ্ছি না। রিকশা চালকরা ৬০-৭০ টাকা চাচ্ছেন।
সিলেটের হুমাউন রশীদ চত্বরে ১০-১৫ জন যাত্রীর দেখা মিলে। তাদের সবাই বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। সেখানে কথা হয় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের রোকসানা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়ে শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) চিকিৎসার প্রয়োজনে সিলেট এসেছিলন। তবে গাড়ি না থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছেন না।
হুমাউন রশীদ চত্বরে কয়েকজন মোটরসাইকেল চালককে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা যায়। তাদের একজন তানভীর আহমদ বলেন, শহরের আশপাশের এলাকায় যাত্রী নিয়ে যাই। এতে আমাদের কিছুটা আয় হয়। যাত্রীরও লাভ হয়।
চন্ডীপুল মোড়ে ধর্মঘটের সমর্থনে শ্রমিকদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। রাস্তায় কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখলেই চলাচলে বাধা দিচ্ছেন তারা।
বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম হাদী ছয়ফুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার আমাদের দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে। সামনে আরও বড় কর্মসূচি দিব।
যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ধর্মঘট হলে দুর্ভোগ হবেই। তবে শ্রমিকদের সমস্যাও বুঝতে হবে।
সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাকারিয়া আহমদ বলেন, ধর্মঘটের সমর্থনে আমাদের চালকরা অটোরিকশা বন্ধ রেখেছেন। সিলেটের কোথাও অটোরিকশা চলাচল করছে না।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এটিএম শোয়েব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাথর কোয়ারি চালুর বিষয়ে পরিবহন ধর্মঘট কেন হবে? ধর্মঘটের কারণে পর্যটকরা সিলেট আসতে পারছেন না। ফলে হোটেল ফাঁকা পড়ে আছে, ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সিলেটের পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে ৭২ ঘণ্টার সকল ধরনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় ‘বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়।
এসপি