সংসদীয় আসন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) থেকে বিএনপির সংসদ সদস্য হানুরুর রশীদ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) থেকে বিএনপির সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করায় আসন ২টি শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এই শূন্য আসন দুটির উপনির্বাচনের আর কয়েক ঘণ্টা বাকি। 

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। দুই আসনে ৩৫২ ভোট কেন্দ্রে ভোট দিবেন ৮ লাখ ১৬ হাজার ৯৪৫ জন ভোটার। 

এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা নির্বাচনকে সামনে রেখে আসন দুটির প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করে গেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের তিনটি উপজেলায় একজন করে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দায়িত্বপ্রাপ্ত জুডিসয়িাল ম্যাজিস্ট্রেটগণ সোমবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

এবার আসন দুটিতে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্বাভাবিক গণসংযোগের পাশাপাশি বড় বড় সমাবেশেরও আয়োজন করা হয়। এর বাইরে অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারণাও চোখে পড়ে। অন্যদিকে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও শেষ করা হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন সেজন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও মোতায়েন থাকবে।

আসন দুটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন ৯ জন। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ৬ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে ৩ জন। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মু. জিয়াউর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার আপেল প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী খুরশিদ আলম বাচ্চু মাথাল প্রতীক, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. গোলাম মোস্তফা গোলাপ ফুল ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ মনোনীত প্রার্থী মো. নবীউল ইসলাম টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওদুদ, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ব্যবসায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন (আপেল) ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ মনোনীত প্রার্থী কামরুজ্জামান খাঁন (টেলিভিশন)।

জেলা নির্বাচন অফিসার মোতাওয়াক্কিল রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে প্রিজাইডিং অফিসার ১৮০ জন এবং ১ হাজার ২৩০ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ২ হাজার ৪৬০ জন পোলিং অফিসার ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন। এই আসনে মোট ভোটার রয়েছে ৪ লাখ ৫ হাজার ৪৫০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১ হাজার ১৭০ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ২৮০ জন। ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮০টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ১ হাজার ২৩০টি।

অপরদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ১৭২ জন প্রিজাইডিং, ১ হাজার ২৪০ জন সহকারী প্রিজাইডিং ও ২ হাজার ৪৮০ জন পোলিং অফসার ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন। সদর আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১১ হাজার ৪৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৮৮৩ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৬১২ জন। এ আসনে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৭২টি এবং ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ২৪০টি।

এদিকে, শোনা যাচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে নৌকা ও আপেলের মধ্যে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনেও নৌকা ও আপেলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবে আসন দুটিতে ভোটাররা কাকে কাকে বেছে নেবেন তা জানা যাবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি রাতে।

জাহাঙ্গীর আলম/আরকে